পায়রার ভাঙনে বিলীনের পথে মির্জাগঞ্জের ৩ গ্রাম

পায়রা নদীর তীব্র ভাঙনে মির্জাগঞ্জের পিপড়াখালী, মেন্দিয়াবাদ ও হাজীখালীসহ কয়েক গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে; ঘরবাড়ি–জমি নদীগর্ভে যাচ্ছে, আর জরুরি প্রতিরক্ষা প্রকল্পের অপেক্ষায় স্থানীয়রা ঝুঁকিতে রয়েছে।

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা

Location :

Mirzaganj
পায়রা নদীতে বাড়ছে ভাঙন
পায়রা নদীতে বাড়ছে ভাঙন |নয়া দিগন্ত

পায়রা নদীর ভাঙনে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মানচিত্র থেকে বিলীন হওয়ার পথে পিপড়াখালী, মেন্দিয়াবাদ ও হাজীখালী গ্রাম।

উপজেলার পিপড়াখালী, মেন্দিয়াবাদ ও হাজীখালী গ্রাম। তবে দু’টি গ্রামের সামান্য কিছু অংশ রয়েছে বলে জানা যায়।

এছাড়াও উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৫টি ইউনিয়ন ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বসতঘর হারা এসকল এলাকার মানুষজন উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছে।

গত ২০ ডিসেম্বর উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে জেলা প্রশাসকের সাথে মত বিনিময় সভায় পায়রার তীব্র ভাঙনের আলোচনাই ছিল অন্যতম।

পায়রার ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার রামপুর, ভিকাখালী, পিপড়াখালী, হাজিখালী ও কাকড়াবুনিয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বসতবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন তাদের বসতঘরের মালামাল সরিয়ে নেয়ার সুযোগও পাচ্ছে না।

ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে রামপুর এলাকায় এক নারী ও গত বছর পিপড়াখালী গ্রামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, পিপড়াখালী ও মেন্দিয়াবাদ এলাকায় পায়রা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিবছর ভাঙনের তীব্রতা বাড়ে।

চরখালী সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবদুল মালেক বলেন, ২০০৭ সাল সিডরের সময় পায়রার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে চরখালীতে ৮৪ জন মানুষের মত্যু হয়। এখনো বাঁধের নড়েবড়ে অবস্থা। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনের স্থান জরুরিভিত্তিতে মেরামত করে যায়। ভাঙনের তীব্রতা বাড়লে উপজেলার মধ্য ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চরখালী সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি হুমকির মুখে পড়বে। নদী থেকে চার-পাঁচ শ’ ফুট দূরে রয়েছে বিদ্যালয়টি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার মধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে নদী ভাঙন। দেউলী-সুবিদখালী ইউনিয়নের স্থানীয়রা জমি না দেয়ায় বেড়িবাঁধ মেরামত হচ্ছে না। তবে আমি ইতোমধ্যে ভাঙনরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাকিব বলেন, মির্জাগঞ্জে পাঁচ-ছয় কিলোমিটারজুড়ে পায়রা নদীর ভাঙন হচ্ছে। ভাঙনরোধে আমাদের জরিপ চলোমান রয়েছে। জরিপের কাজ শেষ হলে বাঁধ তৈরির একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, তবে বড় প্রকল্প গ্রহণের আগ পর্যন্ত ভাঙনকবলিত এলাকায় যে সকল প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলা রক্ষার জন্য আমরা সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রকল্প পাশ হলে নতুন করে বাঁধের কাজ শুরু করা হবে।