রাঙ্গামাটিতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সুদীপ্তা চাকমা(১০) নামে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা: নুয়েন খীসা।
সুদীপ্তা চাকমা রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং ওই এলাকার নোয়াদাম গ্রামের বাসিন্দা করুণাময় চাকমার মেয়ে।
সুদীপ্তার বাবা করুণাময় চাকমা জানান, এক সপ্তাহ আগে জ্বরে আক্রান্ত হয় সুদীপ্তা। শুক্রবার রাতে তার শরীরে জ্বর বেশি আসায় শনিবার সকালে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে আনা হয় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে শুধু একটি পরিবার নয়, শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো গ্রাম, নেমে এসেছে এক অসহনীয় কষ্ট।
ম্যালেরিয়া একটি মশাবাহিত রোগ, যা সময়মতো শনাক্ত এবং সঠিক চিকিৎসায় পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। কিন্তু অজ্ঞতা আর অবহেলার কারণে অনেক সময় এমন প্রাণহানি ঘটে যায়, যা আসলে ঠেকানো যেত।
সিভিল সার্জন ডা: নুয়েন খীসা সুদীপ্তার মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘অভিভাবকদের অসচেতনতা ও অবহেলার কারণেই এই শিশুটির করুণ মৃত্যু হলো। এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগলেও তারা কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাননি। অবস্থা খুবই খারাপ হলে রাঙ্গামাটিতে এনে রক্ত পরীক্ষা করা হয়, যেখানে ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে। কিন্তু ততক্ষণে আর কিছু করার ছিল না। হাসপাতালে আনার পথেই, বলতে গেলে হাসপাতালের বারান্দায়ই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাকে বাঁচানোর কোনো সুযোগই পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিরোধযোগ্য এই মৃত্যুতে পাহাড়ের মানুষের ম্যালেরিয়া সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সুদীপ্তার এই অকাল প্রয়াণ যেন সকলের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সচেতনতার অভাব আজো কতটা ভয়ংকর হতে পারে। এই ঘটনা রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ও জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তা আরো একবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।’
ডা: নুয়েন খীসা আরো বলেন, ‘পাহাড়ে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া এবং সাধারণ মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ, আর কোনো সুদীপ্তাকে অকালে ঝরে যেতে না হয়।‘