ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চালু হওয়া কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামে প্রথমবারের মতো ৬ বধির শিশুর অপারেশন করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বিনামূল্যে তাদের এ ব্যয়বহুল চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়।
এ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার প্রথম অপারেশন শেষে পরবর্তী সময়ে সোমবার ও বুধবার তাদের এ কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট করা হয়।
ফমেক হাসপাতালের কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের স্পেশালিস্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. ইফতেখারুল আলম জানান, হাসপাতালের ইএনটি (নাক কান গলা) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম ফয়সাল সিজন ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এটিএম সুমাইয়েফ-উর রহমান সৈকত এ অপারেশনে অংশ নেন।
এ সময় তারা বরিশালের তিন বছর ৮ মাস বয়সী শিশু হাফিজা, ৪ বছর ৮ মাস বয়সী শিশু আলিফ খান, ভোলার ৩ বছর ১০ মাস বয়সী ওমর ফারুক, কুষ্টিয়ার ৩ বছর ১০ মাস বয়সী হাফিজা, নওগাঁর ৪ বছর ৭ মাস বয়সী রিয়াজ হাসান ও মুন্সিগঞ্জ জেলার ৩ বছর ১০ মাস বয়সী শাহেল ইসলামের কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টের অপারেশন সম্পন্ন করেন। তারা সকলেই জন্মগতভাবে শ্রবণ প্রতিবন্ধী।
জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের জন্য ডেডিকেটেড ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এ কর্মসূচির আওতায় কেবল অস্ত্রোপচার করাই নয় বরং অস্ত্রোপচারের আগে রোগীর নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ও এর পরবর্তী পুনর্বাসন ও অডিটরি ভার্বাল থেরাপি’র (এভিটি) মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিসেবাও দেয়া হয়।
জাতিসঙ্ঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার ৬০০ শিশু বধির হয়ে জন্ম নেয়। ব্যয়বহুল এ ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’ করাতে বর্তমানে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এদিকে বিদেশে এ অপারেশন করাতে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। এ অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের ৮টি সরকারি হাসপাতালে এ কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রকল্প চালু করা হয়।
ফমেক হাসপাতালের এ কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের ডিরেক্টর ও হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের ডিপার্টমেন্টাল হেড প্রফেসর ডা. নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হচ্ছে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা গুরুতর শ্রবণশক্তি হ্রাসে (বধিরতা) আক্রান্ত ব্যক্তিদের শ্রবণ ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে। কানের পেছনের ত্বকের নিচে অপারেশন করে রিসিভার/স্টিমুলেটর অংশটি স্থাপন করে সুরক্ষিত করা হয়। এরপর অপারেশনের ক্ষত সেরে যাওয়ার পর কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টের বাহ্যিক সাউন্ড প্রসেসরটি রোগীর কানের সাথে যুক্ত করে প্রথমবারের মতো সক্রিয় করা হয়। ডিভাইসটিকে রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী প্রোগ্রাম করার পর সে শ্রবণশক্তি ফিরে পায়।



