যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নিকে পরিবর্তনের দাবিতে সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন যশোর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান।
বক্তৃতা করেন চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলিবুদ্দীন খান, বিএনপি নেতা কাজী আব্দুল হামিদ, তরিকুল ইসলাম ডবলু, হবিবর রহমান, শফিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবদল নেতা এম এ মান্নান ও সালাহ উদ্দীন, উপজেলা ছাত্রদল নেতা জসিম উদ্দীন ও মেহেরান হাসান জিতু।
সমাবেশ শেষে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রয়াত বিএনপি নেতাদের কবর জেয়ারতে যান নেতারা।
এদিকে, চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। গত ১০ নভেম্বর চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুণ এ আবেদন করেন। আবেদনে দুই উপজেলার ৫২ জন নেতার স্বাক্ষর রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘আমাদের উপজেলার ২৭ জন নেতার স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী সাবিরা নাজমুল মুন্নির সাথে দলের কর্মী-সমর্থকদের যোগাযোগ কম। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭ বছরে দলের দুঃসময়ে তিনি সক্রিয়ভাবে মাঠে-ময়দানে ছিলেন না। মামলা-হামলায় কারো পাশে দাঁড়াননি। এমন প্রার্থীর পক্ষে নেতা-কর্মীদের মাঠে নামাতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো পছন্দের প্রার্থী নেই। যে নেতা বিগত দিনে সংগঠনের স্বার্থে নেতা-কর্মীদের সাথে থেকে কাজ করেছে, এমন কোনো নেতাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হোক। আবেদনপত্রে চৌগাছা উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে যশোর-২ আসনের প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করা হয়েছে।‘
ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুণ বলেন, ‘এ উপজেলার ২৫ জন নেতার স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র হাইকমান্ডে ইতোমধ্যে জমা দেয়া হয়েছে। আবেদনে স্বাক্ষরকারী নেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত নাম গোপন রাখা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থীর বিপরীতে সাবিরা সুলতানা মুন্নিকে বিজয়ী করা কঠিন হবে। জনপ্রিয়তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নতুন প্রার্থী প্রত্যাশা করছি।’
এদিকে, বিএনপির একটি সূত্রের দাবি, বিএনপির রাজনীতি করে সাবিরা সুলতানা মুন্নি অনেক কিছু হারিয়েছেন। জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। বিএনপি করায় তার স্বামী নাজমুল ইসলামকে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে খুন করেছে। স্বামী খুন হওয়ার পর থেকে তিনি ঝিকরগাছায় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান করে নেন। ২০১৪ সালে ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। দলীয় হাই কমান্ড অনেক যাচাই করে তাকে ধানের শীষের প্রার্থী মনোনীত করেছেন। কিন্তু কিছু নেতা নিজেদের স্বার্থে বিরোধিতা করে চলেছেন।’
এ বিষয়ে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে যশোর-২ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নি জানান, তার প্রাথী পরিবর্তনের জন্য আবেদনপত্রে ৫২ নেতা স্বাক্ষর করেছেন এটা অবিশ্বাস্য। দুই উপজেলার নেতাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। ধানের শীষকে ভালবেসে নেতা-কর্মীরা তার সাথে রয়েছেন। তবে প্রাথমিকভাবে দল মনোনীত করায় অনেকেই চূড়ান্ত প্রার্থী হওয়ার জন্য মাঠে-ময়দানে চেষ্টা করছেন। রেকর্ড পরিমাণ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হবেন। তিনি নারী, তাই দুই উপজেলায় নারীদের ভোট সবচেয়ে বেশি ভোট পাবেন বলে আশাবাদী।
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। যারা দাবি করছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন।’
লিখিত আবেদনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো লিখিত আবেদন পাইনি।’



