নরসিংদীর বেলাবতে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করতে গিয়ে আব্দুল্লা ওরফে ওমর ফারুক (২২) নামে এক রোহিঙ্গা যুবকসহ তিনজনকে আটক করেছে বেলাব থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে, বেলাবো উপজেলার নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ওই তিনজনকে আটক করা হয়।
রোহিঙ্গা যুবক ওমর ফারুক মিয়ানমারের মংডু জেলার মঙ্গল থানার নবী হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার টেংলালী রোহিঙ্গাক্যাম্পে (ক্যাম্প নং-১৩) বসবাস করেন।
জানা যায়, আটক রোহিঙ্গা যুবক তার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য নরসিংদী জেলার বেলাব থানার রাজারবাগ গ্রামের মরহুম অহিদুল্লাহর ছেলে আব্দুল্লাহ (৩৭) ও একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রহমান মাছুমকে (৪৫) উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিয়ে যান। সেখানে তাদের সহায়তায় তিনি নাম : আব্দুল্লা ওরফে ওমর ফারুক, পিতা : মো: মাহফুজুর রহমান মাছুম, গ্রাম : রাজারবাগ, থানা : বেলাব, জেলা : নরসিংদী উল্লেখ করে ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদনের কাগজপত্র জমা দেন।
নির্বাচন অফিসার ও সহকারী নির্বাচন অফিসার তার আবেদনে উল্লেখিত তথ্য যাচাই-বাছাই ও শুনানির পর দেখতে পান আবেদনপত্রে সংযুক্ত কাগজপত্রের সাথে আগত আবেদনকারীর কোনো মিল নেই।
পরে বেলাবো থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে রোহিঙ্গা ওমর ফারুককে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন এবং অপর আসামিদ্বয় মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করার জন্য তাকে নির্বাচন অফিসে নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় আসামিদেরকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ের মো: বিল্লাল হোসেন (৪৭) বেলাবো থানায় একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন যার সূত্রে ওই মামলাটি রুজু করা হয়।
তথ্য যাচাই-বাছাই না করে জন্মনিবন্ধন দেয়ার বিষয়ে উপজেলার আমলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হাসানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, তার কাছে জন্মনিবন্ধনের ফরম চাইলে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি লেখাপড়া করেছেন সেখানকার প্রত্যয়নপত্র আনতে বলেন। পরে তারা একই ইউনিয়নের বটেশ্বর দাখিল মাদরাসার ২০১৭ সালের অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রত্যয়নপত্র নিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জন্মনিবন্ধন ফরম দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে বটেশ্বর দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুল হান্নান জানান, যে প্যাডে প্রত্যয়নপত্র লেখা হয়েছে সেটা তার মাদরাসার নয়। এটা কম্পিউটার থেকে তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং এ ঘটনায় তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।



