রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে প্রতিদিন নির্বিঘ্নে পার হচ্ছে শত শত কোরবানির পশুবাহী ট্রাক। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকাগামী দেশের দক্ষিণ বঙ্গ থেকে আসা গরুবাহী ট্রাকের চালক-হেলপারা জানান, প্রাকৃতিক কোনো কারণ ছাড়া দৌলতদিয়া ঘাটে এবার তেমন সমস্যা নেই।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে প্রতিদিন দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলো থেকে আসা পাঁচ শতাধিক ছোট-বড় পশুবাহী গাড়ি নদী পার হয়ে রাজধানী ঢাকায় ঢুকছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, এ রুটে পশুবাহী গাড়ির সংখ্যা তত বেড়ে চলেছে। সড়ক পথে এ রুটে দক্ষিণাঞ্চলের গরুবোঝাই গাড়িগুলো ঢাকার গাবতলী পশুর হাটসহ বেশিভাগ বড় বড় হাটে পৌঁছানো সহজ ও সাশ্রয়ী।
সপ্তাহজুড়ে দৌলতদিয়ার কয়েকটি ফেরিঘাট ও সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ট্রাক ও গরুর সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি ট্রাকে ১০-১২টি গরুবোঝাই দেয়া হয়। ওই ট্রাকে পাঁচ-ছয়জন গরুর রাখাল ও বেপারীকে গো-খাদ্যসহ ফেরিতে উঠতে দেখা য়ায়।
অভিযোগ উঠেছে, দৌলতদিয়ায় ঘাটে ইজারাদারের কিছু লোক গরুর ট্রাকে থাকা রাখাল ও বেপারীর কাছ থেকে ফেরির লুজযাত্রী হিসেবে ভাড়া আদায়ের নামে চাপ সৃষ্টি করে জনপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে আদায় করে। এগুলো কিসের টাকা নেয়া হয় জানতে চাইলে তারা জানায়, লুজ যাত্রীদের ‘লুজ কালেকশন’ নেয়া হচ্ছে।
তবে ফেরি কর্তৃপক্ষের দৌলতদিয়া ঘাট বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার মো: সালাউদ্দিন জানান, নদী পারাপারের জন্য শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে যারা ফেরিতে উঠবে তাদেরকে লুজ যাত্রী হিসেবে টিকিট কাটতে হবে। বাস-ট্রাক বা অন্য যানবাহনের যাত্রী হয়ে নদী পারাপারে তাদের কোনো টিকিট কাটার প্রয়োজন নেই।
দৌলতদিয়া ঘাটে আগের মতো যানজট ও ভোগান্তি না থাকায় চলাচলরত যাত্রী ও যানবাহনের চালক ও হেলপারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। নিয়ম অনুযায়ী, মাল ভর্তি ট্রাক ফেরিতে ওঠার আগে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত ওয়েট স্কেলে ওজন করা হয়। ওই ওজন স্কেলেও ভোগান্তির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোহ, হরিনাকুন্ড থেকে আসা আলম, সোহেল, খলিল, মিন্টুসহ একাধিক ট্রাকচালক সন্তোষ প্রকাশ বলেন, স্কেল বা দৌলতদিয়া ঘাটে আগের মতো সমস্যা নেই। নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পেরে ভালো লাগছে।
তবে ‘লুজ কালেকশন’ সংশ্লিষ্ট ঘাট ইজারাদারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
দৌলতদিয়া ঘাটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে গরুর গাড়িসহ সকল যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশুবাহী গাড়ি থেকে কেউ কোনো বাড়তি টাকা নিতে পারবে না।
অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।