বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ (বিএইচসিআই) কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৪৮ জন উচ্চ রক্তচাপ আক্রান্ত রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগেই সেবা গ্রহণ করেছেন ৬৯ হাজার ৯৯৩ জন, যাঁদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ রোগীর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এসব রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছেন।
আজ বুধবার সকালে ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশের সহায়তায় পরিচালিত বিএইচসিআই কার্যক্রমের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএইচসিআইয়ের ডিভিশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মো: আসলাম পারভেজ এবং সার্ভিলেন্স মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো: আব্বাস ইবনে করিম।
তারা জানান, দেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ, যার মধ্যে ৩৪ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপ ও সংশ্লিষ্ট হৃদরোগ। এই বাস্তবতায় দেশের ৪৪টি জেলার ৩১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিএইচসিআই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
সভায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, ‘দেশে অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের এনসিডি কর্নারের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।’
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ‘দেশে প্রায় ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে মাত্র ৭ ভাগের এক ভাগ নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান বিএইচসিআইয়ের এডিশনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ডা. মাফফুজুর রহমান ভূঁইয়া।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এনসিডিসি শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগ হ্রাসে বাংলাদেশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে এই উদ্যোগ। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সভায় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিডিসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, সহকারী পরিচালক এবং ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার সিভিল সার্জন।