মালয়েশিয়ায় দুর্বৃত্তের হাতে নিহত বড়াইগ্রামের কবির

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বাড়িতে স্ত্রীর সাথে মোবাইলফোনে শেষ কথা হয় ওই প্রবাসীর। এরপর রাতে কারখানায় দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্বৃত্তরা হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।

বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা

Location :

Baraigram
বামে ছেলে সোহাগ হোসেন, ডানে নিহত কবির হোসেন
বামে ছেলে সোহাগ হোসেন, ডানে নিহত কবির হোসেন |নয়া দিগন্ত

সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার সন্তান কবির হোসেন (৩৮)। কিন্তু সেখানেই কর্মরত অবস্থায় দুর্বৃত্তের হাতে নিহত হন তিনি।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোরে নাটোরে গ্রামের বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর এলে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।

এ সময় প্রতিবেশীসহ আত্মীয়-স্বজন খবর পেয়ে নিহতের বাড়িতে ছুটে আসেন। তাদের আর্তনাদ আর কান্নায় স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো গ্রাম।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে মালয়েশিয়ার চামানডাইয়া উতিরাম এলাকায় কারখানায় দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্বৃত্তরা হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।

নিহত কবির হোসেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর কইল্লীপাড়া গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে। পরিবারে স্ত্রী ও এক ছেলেসন্তান রয়েছে তার।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে কাজের জন্য মালয়েশিয়ায় যান কবির। এরপর সেখানে কেসিএল নামে এক কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ শুরু করেন। আগামী ৩ জানুয়ারি দেশে ফেরার কথা ছিল তার। কেনাকাটাসহ দেশে আসার অন্যান্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বাড়িতে স্ত্রীর সাথে মোবাইলফোনে শেষ কথা হয় ওই প্রবাসীর। এরপর রাতে কারখানায় দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্বৃত্তরা হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। বুধবার ভোর ৪টার দিকে মালয়েশিয়া থেকে তার পরিচিত এক ব্যক্তি মোবাইলে পরিবারের কাছে তার মৃত্যুর সংবাদ জানান।

নিহত কবিরের একমাত্র ছেলে সোহাগ হোসেন বলেন, ‘সামনের মাসে আমার বাবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তার দেশে ফেরার আশায় আমরা অনেক আনন্দে ছিলাম। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। গতরাতে ডিউটিরত অবস্থায় আমার বাবাকে কে বা কারা খুন করেছে।’

এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহাগ তার বাবার লাশটি যেন দ্রুত তাদের কাছে পাঠানো হয় সরকারের কাছে সে দাবি জানান।

স্ত্রী শিউলি বেগম বলেন, ‘রাত ৯টায় আমাকে তিনি ফোন করেন, কিন্তু আমার বুকে ব্যথায় বেশি কথা বলতে পারিনি। ব্যাথা কমলে ফোন দিতে বলেছিলেন। পরে কল দিলে আর পাইনি। আমার স্বামীকে কে মারল, এমন শক্র কে? আমি তার বিচার চাই।’

বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এমন সংবাদে আমরা খুবই শোকাহত। পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে আমি সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি। যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন তার পরিবারের পাশে থাকবে।’