ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ‘আমরা দেখলাম এক শ্রেণির ক্ষমতালোভীরা সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচারকে গুরুত্ব না দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য শুধু পাগল নয়, ডাবল পাগল হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে দুঃখ হয়, এতোগুলো মা সন্তান হারা হলো, এতো মানুষ পঙ্গু হলো, চোখ হারাল। আমাদের প্রত্যাশা ছিল আমাদের যে মৌলিক দাবিগুলো সেগুলোর সংস্কার হবে। খুনি, গুমকারী ও টাকা পাচারকারীদের দৃশ্যমান শাস্তি হবে। এরপরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম এক শ্রেণির ক্ষমতালোভীরা সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচারকে গুরুত্ব না দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য শুধু পাগল নয়, ডাবল পাগল হয়ে গেছে।’
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে আটদলীয় বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জুলাই বিপ্লব একদলকে নামিয়ে অন্য দলকে বসানোর জন্য হয়নি দাবি করে চরমোনাই পীর বলেন, ‘আমি সকলকে বলতে চাই, আজকে হাজার হাজার আলেম, হাফেজ ছাত্র, ও ছাত্রজনতা যে জীবন দিয়েছিল শুধু মাত্র কি একজনকে নামিয়ে আরেকজনকে ক্ষমতায় পাঠাবার জন্য? তারা এদেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করার জন্য, খুনিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, বিদেশীদের তাবেদারি উৎখাত করার জন্য জীবন দিয়েছিল। দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে এবং খুনিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য আমাদেরকে প্রয়োজনে লড়াই করতে হবে।‘
তিনি বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনে এখনো ভাসে আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত করা। বৈষম্য দূর করার জন্য জালেমদের হাত থেকে এ দেশকে রক্ষার জন্য তিনি তার জীবন দিয়েছেন। সেই অনুভূতি থেকে প্রেরণা পেয়েই এক পর্যায়ে আমি জীবনের ভয় না পেয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছিলাম কারফিউ ভেঙে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এদেশকে নিয়ে যারা ছিনিমিনি করতে চায়। এদেশের টাকা যারা বিদেশে পাচার করতে চায়। যারা মাকে সন্তানহারা করতে চায়। তাদের বিষয়ে আপনাদেরকে বলতে চাই, আগের মতো গুণ্ডামি ও কালো টাকা দৌরাত্ম্যের মাধ্যমে আর কিছু করতে পারবেন না। এই জনতাকে আর থামানো যাবে না। আল্লাহর রহমতে ইসলামের বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির এ টি এম আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ নেজামী ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়োরম্যান অ্যাডভোকেট এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম, দিনাজপুর-রংপুর অঞ্চল পরিচালনা কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলাল, মহানগর আমির এ টি এম আজম খান, জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি আমিরুজ্জামান পিয়াল, জেলা সভাপতি এ টি এম গোলাম মোস্তফা বাবু, মহানগর শিবির সভাপতি নুরুল হুদাসহ বিভাগের আট জেলার নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, সকাল থেকেই সমাবেশ উপলক্ষে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে কয়েক লাখ নেতাকর্মী অংশ নেন কালেক্টোরেট মাঠে। দাঁড়িপাল্লা, হাতপাখাসহ আট দলের প্রতীক সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেন তারা। বক্তব্যের মাঝে মাঝে পরিবেশন হয় ইসলামী সঙ্গীত।



