সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু

পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর মৌয়াল ও নৌকার সংখ্যা অনেক কম। প্রথম দিন (বৃহস্পতিবার) ১৮টি নৌকায় পাস নিয়েছে মৌয়ালরা। যেখানে গত বছর প্রথম দিনে করা হয়েছিল ৩৩টি নৌকায়। পাসের সংখ্যা আশানুরূপ না হলে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বন বিভাগ।

শরণখোলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
বন বিভাগ থেকে ছাড়পত্র নিতে আসা মৌয়ালদের নৌকা
বন বিভাগ থেকে ছাড়পত্র নিতে আসা মৌয়ালদের নৌকা |ছবি : নয়া দিগন্ত

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মধু আহরণ মৌসুম। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন থেকে মধু আহরণের অনুমতিপত্র (পাস) দেয়া শুরু হয়।

জানা গেছে, প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে মধু আহরণ শুরু হলেও এবছর ঈদুল ফিতরের কারণে তা দু’দিন পিছিয়ে যায়। তবে এবার সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ অনেকটা কম মৌয়ালদের। দস্যুদের হাতে অপহরণের ভয় বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। আবার দস্যুদের ভয়ে লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না মধু ব্যবসায়ীরাও। ফলে মৌয়াল ও নৌকার সংখ্যা কমে এসেছে।

পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর মৌয়াল ও নৌকার সংখ্যা অনেক কম। প্রথম দিন (বৃহস্পতিবার) ১৮টি নৌকায় পাস নিয়েছে মৌয়ালরা। যেখানে গত বছর প্রথম দিনে করা হয়েছিল ৩৩টি নৌকায়। পাসের সংখ্যা আশানুরূপ না হলে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বন বিভাগ।

মৌয়ালদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দস্যুদের ভয়ে অনেকেই এবার মধু আহরণে যাবেন না। দস্যুর হাতে অপহরণ হলেই ছাড়া পেতে দুই থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হয়। এ কারণে অসংখ্য মৌয়াল এবার নৌকায় পাস করেননি।

মধু ব্যবসায়ী মো: রাসেল আহমেদ, রিপন বয়াতী, মনিরুজ্জামান জানান, আগে বনে ঢুকলেই বনদস্যুদের চাঁদা দিতে হতো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বনে যেতেন মৌয়ালরা। চাঁদা দিতে না পারলে অপহরণ ও নির্যাতন করা হতো। ২০১৮ সালে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর সুন্দরবনে নির্ভয়ে মধু আহরণ করে আসছেন মৌয়াল ও অন্যরা। কিন্তু গত কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে কয়কেটি দস্যু বাহিনীর আবির্ভাব ঘটায় তারা আতঙ্কে আছেন।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব জানান, এবার বনদস্যু নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। মৌয়ালদের নিরাপত্তায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। কোনো নৌকা দস্যুদের কবলে পড়লে দ্রুততম সময়ে কাছের বন অফিসগুলোতে জানানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মৌয়ালদের।