উপ-মহাদেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। মুক্তচিন্তা, নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং শাণিত লেখনীর মধ্য দিয়ে তিনি বিশ শতকের একজন বিরল ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে তিনি নিজের লেখাপড়া এগিয়ে নেন। ১৯০৯ সালে ভাগলপুরে ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ নামে একটি স্কুল স্থাপন করেন তিনি। কিন্তু পারিবারিক কারণে রোকেয়া ভাগলপুর ছেড়ে কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেন। রোকেয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯১৭ সালে এ স্কুল মধ্য ইংরেজি গার্লস স্কুলে এবং ১৯৩১ সালে উঁচ্চ ইংরেজি গার্লস স্কুলে রূপান্তরিত হয়।
বাঙালি মুসলমান সমাজে নারী স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বেগম রোকেয়া। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনালগ্নে নারীশিক্ষা ও নারী জাগরণে তিনিই প্রধান নেতৃত্ব দেন। বেগম রোকেয়াই প্রথমবারের মতো বাঙালি মুসলিম সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারের দাবি সমাজে তুলে ধরেন এবং নারী স্বাধীনতার পক্ষে নিজের মতবাদ প্রচার প্রচারনা শুরু করেন।
তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধ বাসিনী ইত্যাদি। নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী নারী রোকেয়া বেঁচেছিলেন মাত্র বায়ান্ন বছর। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।
প্রতিবছরের ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস পালন করা হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে রংপুর জেলা ও মিঠাপুকুর উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে বিভিন্ন কর্মসুচী পালন করে।



