কুড়িগ্রামের সীমান্তঘেঁষা রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলমান রয়েছে। প্রতিদিনের ন্যায় আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে রৌমারী উপজেলা চত্বর দাঁতভাঙ্গা, চিলমারী ও রাজিবপুরে ও ব্রহ্মপুত্র পারে এমন গণস্বাক্ষর চলে। স্থানীয় নাগরিক সমাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘বহু বছর ধরে রৌমারী-চিলমারী ও রৌমারী-জামালপুর সংযোগ সড়কের অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নদী পারাপারে ভরসা নৌকা বা ট্রলারের ওপর থাকায় বছরের অধিকাংশ সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। ফলে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহনসহ সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
স্থানীয়রা আরো জানান, ‘রৌমারীকে মূল ভূখণ্ডের সাথে কার্যকর যোগাযোগব্যবস্থায় যুক্ত করতে এবং দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণ সময়ের দাবি। এ সেতু নির্মিত হলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ হবে সহজ, দ্রুত ও স্বল্প খরচে।’
গণস্বাক্ষর কর্মসূচি আয়োজন করেন রৌমারীর সচেতন নাগরিক সমাজ। আয়োজকের মধ্যে উপস্থিত রৌমারী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর আলম খান হিরোবলেন, ব্রহ্মপুত্র নদটি আমাদের রৌমারী, চিলমারী ও রাজীবপুরের ৪ লাখ মানুষের প্রধান সমস্যা। এই নদের কারণে শতশত বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষ জেলা থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে তাদের কাজের তাগিদে নৌকা যোগে জেলার সাথে যোগাযোগ করে চলছে। তাই এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি জেলার সাথে রৌমারী মুক্তাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ স্থাপনে ব্রহ্মপুত্র সেতু চাই। কয়েক হাজার মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তা প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে বলে জানান। একই সাথে দ্রুত সেতু নির্মাণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত একজন শিক্ষক বলেন, ‘এই সেতু শুধু রৌমারীর নয়, পুরো সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনমান বদলে দিতে পারে। উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে, অর্থনীতি প্রাণ পাবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও জানান, সেতু হলে পরিবহন ব্যয় কমবে, ফলে পণ্য আনা–নেওয়ায় গতি আসবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে।
উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ আশা প্রকাশ করেন, সরকার অতি দ্রুত ব্রহ্মপুত্র নদে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেবে এবং দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে রৌমারীবাসীর।



