বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে কারো হাতে ইজারা দেয়া হয়নি। দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে এতো মানুষ শহীদ হলো। আমাদের শহীদদের রক্তের মূল্য দিতে হবে। তাদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করতে হবে। শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদের কোনো মূল্য নেই। এজন্যই দেশের অধিকাংশ দল একসাথে গণভোটের দাবি জানাচ্ছে। এ বিষয়টিকে অন্তর্বর্তী সরকারের অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।’
বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে দক্ষিণ সুরমার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আগামী নির্বাচনে সিলেট-২ ও ৩ আসনের জামায়াতের দায়িত্বশীলদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ভোট কেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষায় কারো কাছে মাথা নত করবো না। মানুষের প্রকৃত মুক্তির জন্য প্রয়োজনে আবার রক্ত দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে তার ভোট প্রদানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। আগামী নির্বাচনকে জিহাদের ময়দান মনে করে কাজ করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে ভোট কেন্দ্রে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এজন্য আমরা নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেইং ফিল্ডের দাবি জানাচ্ছি। আগামী নির্বাচন দেশ জাতি ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেটি ইসলামী আন্দোলনের জনশক্তির মাথায় রেখে জনমত আদায়ে পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে, জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সিলেট অঞ্চল টিম সদস্য ও সিলেট-১ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হাফিজ আব্দুল হাই হারুন।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমির ও সিলেট-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, মহানগর নায়েবে আমির ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, সিলেট-৩ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা লোকমান আহমদ, সাবেক ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন, বিশ্বনাথ পৌরসভা জামায়াতের আমির এইচ এম আখতার ফারুক, বিশ্বনাথ উপজেলা আমির নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, ওসমানীনগর উপজেলা আমির মো: সোহরাব আলী, বালাগঞ্জ উপজেলা আমির ডা: আব্দুল জলিল, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আমির ইমরান আহমদ চৌধুরী, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আমির সাব্বির আহমদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের একটা অমূল্য সম্পদ হচ্ছে যুব সমাজ। যারা চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে। অদম্য দুঃসাহসী এই যুব শক্তিকে কাজে লাগাতে চাই। তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের কোন ঠাঁই হবে না। দুঃশাসন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমরা কোনো বাধাই মানবো না। দেশপ্রেমিক জনতাকে সাথে নিয়ে দুর্নীতি ও ঘুষের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। ইনশাআল্লাহ।‘
তিনি বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পথ সব সময়ই কঠিন। তবুও যথাসময়ে আল্লাহর সাহায্য আসায় কঠিন পরিস্থিতি সহজ হয়ে যায়। নবী ও রাসুল (সা:) এর জীবনাদর্শে আমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা। আল্লাহ পাক দ্বীনের ময়দানে কাউকে একা ছেড়ে দেন না। মুসা (আ:) কে সঙ্গ দিতে তার ভাই হারুন (আ:) কেও আল্লাহ পাক নবী বানিয়েছিলেন। মুসা (আ:) ফেরাউনের সাম্রাজ্যে কঠিন আঘাত করেছিলেন। আল্লাহ পাক তাকে বিজয় দান করেছিলেন। মুসা (আ:) ফেরাউনের কবল থেকে তার জাতিকে মুক্ত করেছিলেন। সেভাবে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনও আমাদের দেশকে মুক্ত করবেন। আমাদেরকে শুধু নৈতিকতার আলোকে দ্বীনের দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।



