হাটহাজারীতে জামায়াতের গোলটেবিল বৈঠক

২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে হত্যা করা হয় : নজরুল ইসলাম

‘২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ লগি-বৈঠার তান্ডবে যেদিন লাশের ওপর নাচানাচি করে আওয়ামী লীগ, সেদিনই মূলত গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে হত্যা করা হয়।’

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

Location :

Chattogram
হাটহাজারীতে জামায়াতের গোলটেবিল বৈঠক
হাটহাজারীতে জামায়াতের গোলটেবিল বৈঠক |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ লগি-বৈঠার তান্ডবে যেদিন লাশের ওপর নাচানাচি করে আওয়ামী লীগ, সেদিনই মূলত গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আমরা ছিলাম ফ্যাসিবাদের আন্ডারে। সুতরাং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাই ঘোষণা পত্র যদি গ্যাজেট করা না হয়, এর সাথে শহীদদের তালিকা, আহতদের তালিকা করা না হয়, তবে রাজনৈতিক পরিবর্তন হলেই জুলাই আন্দোলনে সম্পৃক্তদের অপরাধী করা হবে। তাই তিনি অচিরেই জুলাই ঘোষণাপত্র গ্যাজেট করে প্রকাশের জোর দাবি জানান।

পিআর পদ্ধতি সহ ৫ দফা দাবি আদায়ে নেতৃস্থানীয় সচেতন নাগরিকদের নিয়ে হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির মো: আলা উদ্দিন সিকদার।

মূখ্য আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: এনায়েত উল্ল্যাহ পাটোয়ারী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী,চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও মাওলানা জামাল হোসাইন, চট্টগ্রাম মহানগরী ওলামা পরিষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা মিয়া মো: শরীফ হোসাইন।

৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় হাটহাজারী পার্বতী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক শোয়াইব চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল মালেক চৌধুরীর সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা সভাপতি মাওলানা আতিউল্ল্যা নুরী, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সহসভাপতি অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জনাব মিজানুর রহমান জামায়াতের উপজেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুদ্দীন চৌধুরী ও মিজানুর রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাশার, শ্রমিক কল্যাণ সেক্রেটারি মো: রাশেদুল আলম, উপজেলা পেশাজীবী সেক্রেটারি মুহাম্মাদ আব্দুল আজিজ খান, শিবিরের সাবেক হাটহাজারী উপজেলা সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী,হাটহাজারী ইসলামিক সেন্টারের সাবক সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মো: শোয়েব, প্রধান শিক্ষক মো: সেলিম উদ্দিন রেজা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা সদস্য সচিব মাওলানা মামুন অর রশিদ প্রমুখ।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির মো: আলা উদ্দিন সিকদার বলেন, আজকে জামায়াতের ৫ দফা দাবি জনগণের দাবিরূপে প্রতিফলিত হয়েছে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কালো টাকার ছড়াছড়ি হবে না।এখন যেভাবে কালো টাকার ছড়াছড়ি, ভোট জালিয়াতি, মারামারি হচ্ছে সে মারামারি কাটাকাটি আর হবে না।যারা পিআর পদ্ধতি চায় না, তাদের উদ্দেশ হচ্ছে কেন্দ্র দখল করা। এই কেন্দ্র দখলের জন্য জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়নি।বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্টু নির্বাচন অবশ্যই কার্যকর করতে হবে।

মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: এনায়েত উল্ল্যাহ পাটোয়ারী বলেন, একটি দেশের স্বাধীনতা মানে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ করা, মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত একটি রাষ্ট্র গঠন করা। কিন্তু আমরা দেখেছি গত ৫৪ বছরে আমরা দেখেছি যেই বৈষম্য দূর করার জন্য এই স্বাধীনতা সেই স্বাধীনতার ধারে কাছেও আমরা যেতে পারিনি। তাই আমরা চাই আগামীর বাংলাদেশ ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে গড়ে তোলা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ।

গোলটেবিল বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন, যুব নেতা ও ক্রীড়া সংগঠক আসলাম মোরশেদ,আদর্শ সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো: নুরচ্ছফা ও সেক্রেটারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,হাটহাজারী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মো: জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক ঐক্যপরিষদের সেক্রেটারি সাংবাদিক মো: বোরহান উদ্দিনসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃবৃন্দ।

জামায়াতের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১) জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। ২) নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। ৩) সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। ৪) গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে এবং ৫) বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব দাবিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।