রংপুরে সাংবাদিক অপহরণ ও হেনস্তা, জড়িতদের গ্রেফতার দাবি

রংপুরে সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন।

সরকার মাজহারুল মান্নান, রংপুর ব্যুরো

Location :

Rangpur
রংপুরে সাংবাদিক অপহরণ ও হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
রংপুরে সাংবাদিক অপহরণ ও হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি |নয়া দিগন্ত

রংপুরে খবর প্রকাশের জেরে দৈনিক সংবাদ, একুশে টেলিভিশন ও বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে সিটি করপোরেশনে নিয়ে মারধর, হেনস্তা ও জোর করে ক্ষমা চাওয়ানোর চেষ্টার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে সাংবাদিকরা।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কোর্ট মসজিদ এলাকা থেকে তুলে নিয়ে তাকে মারধর ও হেনস্তা করে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদে ‘রংপুরে জুলাই যোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, ৫ কোটি টাকার বাণিজ্যের পায়ঁতার’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। এই খবর প্রকাশের জেরে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কোর্ট মসজিদ এলাকা থেকে সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে রকি নামের এক যুবকের নেতৃত্বে ৭-৮ জন যুবক জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে অটোরিকশায় করে সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে তাকে টেনে-হিচরে নতুন ভবনের দোতলায় প্রধান নির্বাহীর রুমে সামনে নিয়ে যায় এবং তাকে নিউজের জন্য প্রধান নির্বাহীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তখন প্রধান নির্বাহী তার কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না।

এ ঘটনার খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। তাৎক্ষণিকভাবে নতুন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সাংবাদিকরা। এসময় ঘটনার বর্ণনা দেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সচিব লিয়াকত আলী বাদল।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিউজের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুব রহমান, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব ও রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিউজের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সভাপতি শাহ বায়েজিদ আহমেদ, রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মমিনুল ইসলাম রিপন, রংপুর রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি শরিফা বেগম শিউলি, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মুকুল, রংপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ফেরদৌস জয় প্রমুখ।

বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারধরকারীদের গ্রেফতার এবং সিও উম্মে ফাতেমাকে অপসারণের দাবি জানান তারা। একই দাবিতে সোমবার রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছে সাংবাদিককরা।

আরো অভিযোগ উঠেছে, অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে সাংবাদিকরা চলে যেতে থাকলে সিটির করপোরেশনের এক কর্মকর্তাসহ সিও ঘটনাস্থলে যান এবং উত্তেজনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে কয়েকজন আবারো সাংবাদিকদের হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। তাদেরকে সিটি করপোরেশনের ভেতরে আটকে রাখেন। প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।