মুন্সীগঞ্জের মোল্লাকান্দিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সদর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শটগান ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় কে এম সোহেল রানা (৪৬) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে সেনাবাহিনী।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা-রাতে ওই ইউনিয়নের চরডুমুরিয়ার আনন্দপুর গ্রামে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আটক সোহেল আমঘাটা গ্রামের দৌলত মাস্টারের ছেলে এবং আলোচিত আরীফ মীর হত্যা মামলার ২২ নম্বর আসামি।
সেনাবাহিনীর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়— গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত ৭টা থেকে অভিযান শুরু করে সেনা সদস্যরা। এ সময় সোহেল রানার বাড়ি থেকে লুট হওয়া শটগানটি উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে মোল্লাকান্দির আশুরান এলাকার রতন দেওয়ানের বাড়িতে আরেকটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। তবে রতন দেওয়ান পলাতক রয়েছেন।
রাজনৈতিক সহিংসতা ও অবৈধ অস্ত্রের ভয়াবহ বিস্তার
গত ১০ নভেম্বর মোল্লাকান্দিতে রাজনৈতিক সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার পর থেকে এলাকায় সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের দাপট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ— অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই আছে। গত ২০ দিনে সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় বাড়ছে আতঙ্ক
সহিংস ঘটনার পর বেশ কয়েকটি মামলা হলেও অধিকাংশ চিহ্নিত সন্ত্রাসী এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনের এ নিষ্ক্রিয়তা স্থানীয়দের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ— প্রশাসনের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবের সুযোগে সন্ত্রাসী চক্রগুলো আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের মতে, একটি শটগান উদ্ধার পুরো সমস্যার সমাধান নয়; বরং মোল্লাকান্দিতে বিস্তৃত অস্ত্র-নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যাপক অভিযান প্রয়োজন।
সেনাবাহিনী উদ্ধারকৃত অস্ত্র, কার্তুজ এবং আটক সোহেল রানাকে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এবং স্থানীয়দের যে কোনো সন্দেহজনক তথ্য নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে জানানোর আহ্বান জানিয়েছে।



