শরীয়তপুরের জাজিরায় মসজিদের মাইকে ফজরের আজান দিয়ে নামাজে ডাকাকে কেন্দ্র করে খবির সরদার (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আলমাস সরদার নামের স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনে থানা হেফাজতে নিয়েছে জাজিরা থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ওমরদি মাদবরকান্দি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত খবির সরদার (৫৫) বড়কান্দি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ওমরদি মাদবরকান্দি গ্রামে ইউনুস সরদারের ছেলে।
জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের নয়াবাজার-সংলগ্ন ওমরদি মাদবরকান্দি গ্রামে সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম প্রতিদিন ফজরের আযানের পর মুসল্লিদের নামাজে আসার জন্য মাইকে বয়ান করে অনুরোধ জানান। এতে ঘুমে ব্যাঘাত হওয়ায় ওই ইমামের ওপর ক্ষুব্ধ হন একই গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা আলমাস সরদার (২৭)। দু’দিন আগে এ নিয়ে ইমামের সাথে আলমাসের বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে ওই মসজিদ কমিটির সদস্য খবির সরদার প্রতিবাদ করলে আলমাস তার ওপরও ক্ষিপ্ত হন। পরে আলমাস হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। এ বিষয়ে ঘটনার দিন গত রোববার মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন সরদার জাজিরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
আরো জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে খবির সরদার স্থানীয় নয়াবাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ওঁৎ পেতে থাকা আলমাস ও তার কয়েকজন সহযোগী ধারাল ছুড়ি দিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই দানেশ সরদার বলেন, মসজিদের মাইকে আজান ও বয়ান দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আলমাস সরদার ইমামকে হুমকি দিয়েছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। এরপর থেকেই আলমাস আমাদের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। আজ সুযোগ বুঝে খবির সরদারকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি।
জাজিরা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বজলুর রশিদ শিকদার বলেন, মাইকে আজান দেয়ায় ছাত্রলীগ নেতা আলমাস সরদারের ঘুমে ব্যাঘাত হওয়ায় মসজিদের হুজুরকে হুমকি দেয়। পরে মসজিদের সবাই প্রতিবাদ জানায়। সন্ত্রাসী আলমাস গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে খবির সরদারকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুনসুর সরদার নামে একজনকে থানা হেফাজতে হয়েছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।