সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় লিবিয়ার সাগরে মাদারীপুরের দুই যুবক জাফর বেপারী ও সিরাজুল হাওলাদারের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) তাদের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
নিহত জাফর বেপারী মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের চর বাজিতপুর এলাকার লাল মিয়া বেপারীর ছেলে ও সিরাজুল হাওলাদার একই এলাকার হামেদ আলী হাওলাদারের ছেলে।
জানা যায়, ভাগ্যের চাকা পরির্বতনের জন্য বৈধ পথ এড়িয়ে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ১ সেপ্টেম্বর বাড়ি ছাড়েন জাফর বেপারী ও সিরাজুল হাওলাদার। পরে লিবিয়া পৌঁছে ১৪ অক্টোবর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ওঠেন জাফর ও সিরাজুলসহ অর্ধশত যুবক। ইঞ্জিনের তেল শেষ হয়ে গেলে মধ্যসাগরে ভাসতে থাকে তাদের বহনকারী নৌকাটি। একসপ্তাহ ভেসে থাকার পর তীব্র শীতে সাগরেই মৃত্যু হয় জাফর ও সিরাজুলসহ বেশ কয়েকজন যুবকের। বিষয়টি দালালচক্র গোপন রাখলেও মঙ্গলবার দুই যুবকের মৃত্যুর খবর আসলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাদের স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, চর বাজিতপুর গ্রামের চান্দু সরদারের ছেলে লোকমান সরদার জাফর ও সিরাজুলের পরিবারের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নেন। বিনিময়ে কোনো ঝামেলা ছাড়াই তাদের সরাসরি ইতালি পৌঁছে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। কিন্তু জাফর ও সিরাজুলের মৃত্যুর পর গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত লোকমান।
বাড়িতে গিয়ে লোকমান সরদারকে পাওয়া না গেলেও তার স্বজনদের দাবি, লোকমান ওই ঘটনার সাথে জড়িত নন।
নিহত জাফরের বাবা লাল মিয়া বেপারী বলেন, ‘আমার বড় ছেলের এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। দালাল লোকমান আমার পরিবার থেকে একসাথে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। তখন কথা দিয়েছিলো, কোনো ঝামেলা ছাড়াই জাফরকে ইতালি পৌঁছে দেবে। কিন্তু সাগরেই মৃত্যু হলো জাফর ও সিরাজুলের। ওই ঘটনায় জড়িত লোকমান ও তার পরিাবরের সদস্যরা। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
অভিযুক্ত লোকমানের ভাইয়ের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাসুর কোনো দালাল নন, তার দুই ছেলে ইতালি যাওয়ার পর এলাকার অনেকেই তার কাছে আসছেন। এ ঘটনায় তার কোনো দোষ নেই। অন্য এক বড় দালাল আছে তিনিই সব জানেন। ওই দালালের পরিচয় আমরা জানি না, তবে লোকমান ভাই জানেন।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় দুই যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



