চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার শাখারিয়া পিচমোড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের দুই পরিবারের মধ্যে চিকন শিশুকে মোটা বলার ঘটনাকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। উভয়পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। উভয়পক্ষের সকল আহতদেরকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি শিশু শারীরিক ভাবে অত্যন্ত চিকন হওয়ায় তার সহপাঠীরা তাকে মোটা বলে পরিহাস করে। সেই ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে শাখারিয়ার দাস পাড়ায় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় লাঠিসোটা, রড, হাসুয়া ও দা নিয়ে উভয়পক্ষ একে অপরের বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালায়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের তিন নারীসহ অন্তত ১০জন গুরুতর জখম হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের মাথা কেটে ও হাত ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে টাকা ও সোনার আংটি কেড়ে নেয়ার ঘটনায় কারো কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী প্রশান্ত কুমার দাসের অভিযোগে বলা হয়েছে, নিত্য দাস ও তার পরিবার বেআইনি জনতাবদ্ধে তাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় প্রশান্ত কুমারের ভাইপো মাইকেল দাসকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করা হয়। প্রশান্ত কুমার নিজেও বাম হাতে গুরুতর জখম হয়েছেন। তার মা আরুতি দাস ও বাবা শঙ্কর দাসকেও মারপিট করা হয়। এছাড়া হামলার সময় তার পকেট থেকে ১৩ হাজার টাকা ও হাতে থাকা একটি সোনার আংটি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী সোনা দাসের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রশান্ত দাস, প্রভাস দাস ও তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় প্রশান্ত দাস তার ভাই সিমান্ত দাসকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মেরে গুরুতর জখম করেন। আহত সিমান্ত দাস মাটিতে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করতে গেলে সোনা দাস নিজেও মারপিটের শিকার হন। প্রভাস দাস তার বাম হাতের আঙুলে কোপ দেন। হামলার সময় তাদের মা মিনতি রানী দাস ও ভাবি কমলা দাসীর কাপড় টেনে শ্লীলতাহানির অভিযোগও করেছেন তিনি।
একই গ্রামের বিএনপি নেতা আয়ুব হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। উভয়পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে। যতটুকু জেনেছি, এটি আসলে একটি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঘটেছে। আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয় ভাবে মীমাংসার। মারামারির ঘটনা ঘটলেও চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। আসলে এসব ঘটনার পরবর্তীতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, উভয়পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।