রংপুরের সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ করে সিটি করপোরেশনে নিয়ে গিয়ে মারধর ও অন্য সাংবাদিকদেরকে আটকে হেনস্তার ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার( ৯ অক্টোবর) দুপুরে রংপুরের নিউ ইঞ্জিনিয়ার পাড়া থেকে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। যা কাচারীবাজারে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফরহাদ হোসেন, মনিরুজ্জামান হিজবুল, জাকারিয়া ইসলাম জীম, রায়হান মনুসর, ইকবাল আহমেদ, মুরাদ হোসেন, সাব্বির হায়দার আশিক, মেজবাহুল হিমেল প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘জুলাই রাজবন্দির নাম ব্যবহার করে অটোরিকশার লাইসেন্স নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক বাদলকে অপহরণ করে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার রুমের সামনে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। জড়িতদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপরন্তু সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধানের নেতৃত্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীা মব তৈরি করে সাংবাদিকদের সিটি ভবনের ভেতরে আটকে রেখে হেনস্তা করার মতো ধৃষ্টতা দেখানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান মাস্টারমাইন্ড এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
বক্তারা আরো বলেন, সরকারি চাকরি বিধি অমান্য করে রংপুর সিটি করপোরেশনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এসময় আগামী সাতদিনের মধ্যে মাস্টারমাইন্ডসহ আসামিদের গ্রেফতার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক সংবাদ, একুশে টেলিভিশন ও বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার এবং রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সচিব লিয়াকত আলী বাদলকে কাচারীবাজার থেকে জুলাই রাজবন্দির পরিচয়ে রকি নামের এক যুবকের নেতৃত্বে অপহরণ করে রংপুর সিটি ভবনে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে নতুন ভবনের দোতলায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিউজের জন্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ছুটে গেলে সিটি করপোরেশনের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রধান ফটক আটকে সাংবাদিকদের মারধর ও হেনস্তা করে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক বাদল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমা, ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, সাবেক কাউন্সিলর লিটন পারভেজ, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তম্ময় কুমার সরকারসহ ১৪ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিকরা।