শেরপুরে আরডিএ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির মামলায় গ্রেফতার ২

শেরপুরে পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি (আরডিএ) বগুড়ার অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি (অন্যের দ্বারা পরীক্ষা দেওয়ানো) দিয়ে উত্তীর্ণ হবার পর মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে জিহান আফ্রিদি ব্রাইট (২২) ও শাপলা বেগম (২৯) নামের দুই পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

আকরাম হোসাইন, শেরপুর (বগুড়া)

Location :

Sherpur
শেরপুরে আরডিএ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির মামলায় গ্রেফতার ২
শেরপুরে আরডিএ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির মামলায় গ্রেফতার ২ |নয়া দিগন্ত

শেরপুরে পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি (আরডিএ) বগুড়ার অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি (অন্যের দ্বারা পরীক্ষা দেওয়ানো) দিয়ে উত্তীর্ণ হবার পর মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে জিহান আফ্রিদি ব্রাইট (২২) ও শাপলা বেগম (২৯) নামের দুই পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে আরডিএ’র উপ-পরিচালক (প্রশাসন বিভাগ) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন বাদী হয়ে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

রোববার দুপুরে তাদেকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- ধুনট উপজেলার সাতবেকি গ্রামের জাহিদ হোসেনের ছেলে জিহান আফ্রিদি ব্রাইট (রোল নম্বর-৩০০৩৩৩১) ও বরগুনা আমতলি আড়পাঙ্গাসিয়া এলাকার সজিব হোসেনের স্ত্রী শাপলা বেগম (রোল নম্বর-৩১০০৩০০৫) বর্তমানে নারায়নগঞ্জ ফতুল্লা শিমু মার্কেট এলাকায় বসবাস করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ বগুড়ায় আরডিএ’র অফিস সহায়ক পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৬৫ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। পরের দিন ১ নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে আরডিএ’র মহাপরিচালকের অফিস কক্ষে মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) শুরু হয়। ওই দিন দুপুর ২টা সময় পরীক্ষার্থী শাপলা বেগম ও তার পরের পরীক্ষার্থী জিহান আফ্রিদি ব্রাইটকে মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলে তারা কোনো প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেননি। এতে তাদের প্রতি সন্দেহ হলে লিখিত পরীক্ষার খাতা নিয়ে এসে হাতের লেখার সাথে মিলিয়ে দেখা হয়। এতে লিখিত পরীক্ষার লেখার সাথে তাদের বর্তমান হাতের লেখার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া পায়নি।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি দ্বারা প্রবেশপত্র জালিয়াতি করে তাদের পরিবর্তে অন্যদেরকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উত্তির্ণ হয়।

আরো জানা যায়, শাপলা খাতুন, জিহাদ আফ্রিদি নামের দুইজনকে ও শাপলা খাতুনের সহায়ক হিসেবে মাইদুল ইসলাম নামের একজনসহ তিনজনকে প্রশাসনিক ভবনে আটকে রাখে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাইদুল ইসলাম নিজেকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দেন, পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এছাড়াও নিয়োগ পরীক্ষায় আরেক সহায়ক ফারুক আহমেদ নামের এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ততার সন্দেহে আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছিল।

এ ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এ নিয়োগ পরিক্ষায় আরডিএ অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। এছাড়া চারজনকে আটক করা হলেও সেখানে দুইজনের নামে মামলা দিয়ে কিসের বিনিময়ে অন্য দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হল সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।

উপ-পরিচালক (প্রশাসন বিভাগ) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন বলেন, আমরা দুজনকে আটকের পর এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্তার অভিযোগে জনরোষের কারনে মাইদুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি আরডিএর ভিতরে এসে আশ্রয় নিলে তাকে সহ তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। সাধারণ জনগণ আরো একজনকে পুলিশের কাছে দিয়েছে বলে শুনেছি।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জয়নুল আবেদিন বলেন, আমাদের নিকট দুইজনকে দেয়া হয়েছিল। আটককৃত দুইজনের বিরুদ্ধে আরডিএ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়া অন্য দুজন আসামিদের আত্মীয় হিসেবে থানায় এসেছিল কিন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা চলে গেছে। আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।