সার্বিয়ায় অপহৃত সোনাগাজীর ফয়জুল বিল্লাহ পাপ্পুর খোঁজ ২০দিনেও না মেলায় পরিবার গভীর উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ করেছেন।
অপহরণ কারীরা নির্যাতন করে পরিবারের কাছে ভিডিও পাঠিয়ে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছেন বলে পরিবার দাবি করেছেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের সরকারি পাইলট হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ছেরাজুল হকের বড় ছেলে ফয়জুল বিল্লাহ পাপ্পু। উন্নত জীবনের আশায় পাঁচ বছর আগে সার্বিয়া যান পাপ্পু। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ভয়াবহ এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৪ জুন রাত ৮টা ৪৯ মিনিটে একটি অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশে পাপ্পুর পরিবারের কাছে কল আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, ছেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম। সেই সাথে বাংলাদেশী প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাঠানো হয় বাংলাদেশের আটটি ব্যাংক ও মোবাইল নম্বর। তিন দিনের মধ্যে টাকা না দিলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন অজ্ঞাত অপহরণকারীরা। কয়েক দফা ভিডিও কলে পাপ্পুকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে সেই দৃশ্য ও শব্দ পরিবারের সদস্যদের শুনানো ও দেখানো হয়। এরপর থেকে ছেলের কোনো তথ্য না পেয়ে পাপ্পুর মা-বাবাসহ পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
১৬ জুন তার মা আয়েশা বেগম সোনাগাজী মডেল থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ অনুযায়ী একটি মামলা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের মো: মিয়ার ছেলে মো: ইব্রাহীমকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
পাপ্পুর মা বলেন, ‘আমার ছেলেকে বাঁচান। যেভাবেই হোক, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনুন। তার মৃত্যু হলেও যেন অন্তত জানাজা পড়াতে পারি।’
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো: বায়েজীদ আকন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘একজন আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের দেয়া ব্যাংক একাউন্ট গুলো চিহ্নিত করতে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের আদেশ পেলে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাধীদের চিহ্নত করা সহজ হবে।’
তিনি আরো জানান, ছেরাজুল হক ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগম ছেলেকে জীবিত কিংবা মৃত—যেভাবেই হোক দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।