বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চরকল্যাণী এলাকায় বাঁধ ভাঙনে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ১২ গ্রামের মানুষ এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। অনেকদিন পর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ হওয়ায় ভোগান্তি কমেছে গ্রামবাসীর।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানির তীব্র চাপে কাটাখালী বাঁধটি ভেঙে যায়। ফলে বিলজয় সাগর, জয়লা, জালশুকা, কইগাতী, রুদ্রবাড়িয়া, আওলাকান্দি, চককল্যাণী, ভবনগাতি, জয়নগর, গুয়াগাছি, চরকল্যাণী ও বেলগাছি গ্রামের লাখো মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বাঁধ ধসের কারণে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষের চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এছাড়া কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ, বাজারে যাতায়াত, রোগী পরিবহনও ব্যাহত হয়ে পড়ে।
এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এস আর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জেলা বিএনপির সদস্য ও বগুড়া-৫ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী আসিফ সিরাজ রব্বানীর নজরে এলে তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় ও ব্যক্তিগত অর্থায়নে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কয়েক দিনের মধ্যেই সাঁকো নির্মাণ শেষ হলে এলাকাবাসীর যাতায়াত স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় কৃষক সমশের আলী বলেন, ‘বাঁধ ভাঙার পর কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারিনি। সাঁকো হওয়ায় এখন সহজে পণ্য পরিবহন করতে পারছি।’
বিলজয় সাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আলোর দিশারী আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী সিজান সরকার, শুভ ও রফিকুল জানান, ‘আগে স্কুলে যেতে অনেক সময় লাগত, সময়মতো পৌঁছানো যেত না। এখন সাঁকোর জন্য সময়মতো স্কুলে যেতে পারছি।’
এছাড়া বাঁধ ভাঙনের কারণে সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের গৃহহীন মাজেদা বেগমের (৫৫) বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে আসিফ সিরাজ রব্বানী তাকে আর্থিক সহায়তা দেন।
আসিফ সিরাজ রব্বানী বলেন, ‘মানুষের দুর্দশা লাঘবে নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে যতটুকু সম্ভব করেছি। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, যেন দ্রুততম সময়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।’