জরাজীর্ণ ঘরে বিধবা ফিরোজা বেগমের মানবেতর জীবন

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৭৩ বছর বয়সী বিধবা ফিরোজা বেগম ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে, খাবার-শৌচাগার ও বয়স্ক ভাতা ছাড়া মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়রা সরকারের সহায়তা জরুরি বলে দাবি করছে।

মুহাম্মদুল্লাহ, সখীপুর (টাঙ্গাইল)

Location :

Tangail
জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে দিন কাটছে ফিরোজা বেগমের
জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে দিন কাটছে ফিরোজা বেগমের |নয়া দিগন্ত

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কচুয়া পূর্বপাড়া গ্রামের ৭৩ বছর বয়সী বিধবা ফিরোজা বেগমের জীবন কষ্ট আর দুর্ভোগে ভরা। জরাজীর্ণ ভাঙা মাটির ঘরে আশ্রয় নিয়েই তার দিন কাটছে। নেই টিউবওয়েল, নেই শৌচাগার, নেই বয়স্ক ভাতা- এমনকি তিন বেলা খাবারের নিশ্চয়তাও নেই এ অসহায় বৃদ্ধার জীবনে।

সরেজমিন দেখা যায়, ফিরোজা বেগমের ঘরটির অবস্থা একেবারেই নাজুক। চারপাশের মাটির বেড়া হেলে পড়েছে, যে কোনো মুহূর্তে ধসে যেতে পারে। পুরনো মরিচাধরা টিনের ছাউনিতে অসংখ্য ছিদ্র ও ফাটল, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি পড়ে ভেতরে। রাতে একটি পুরনো জলচৌকির ওপর বসানো জায়নামাজই তার ঘুমানোর জায়গা। ঝড়-বৃষ্টি হলে ওই ঘরে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।

কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফিরোজা বেগম। তিনি বলেন, ‘কোনো দয়ালু মানুষ যদি আমারে একটা ঘর বানাইয়া দিত আর একটা টিউবওয়েল বসাইয়া দিত, আমি সারাজীবন নামাজ পড়ে তার জন্য দোয়া করতাম। রাতে যদি শান্তিতে নামাজ পড়তে আর ঘুমাতে পারতাম, তবে সব দুঃখ ভুলে যাইতাম।’

ফিরোজা বেগমের স্বামী আবু তালেব মিয়া মারা গেছেন প্রায় ২০ বছর আগে। তিন ছেলেই অভাবের সংসার চালাচ্ছেন, মায়ের জন্য ঘর নির্মাণ বা সহযোগিতা করার সামর্থ্য তাদের নেই। জমিজমা না থাকায় অন্যের শৌচাগার ব্যবহার করতে হয় তাকে। এরই মধ্যে শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগব্যাধি। সব মিলিয়ে তার জীবন যেন এক কষ্টের শোকগাথা।

প্রতিবেশী মিনা বেগম ও নার্গিস আক্তার জানান, ফিরোজা বেগমের দুর্দশা বহুদিন ধরেই চলছে, কিন্তু তিনি কোনো সরকারি সহায়তা পাননি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (ইউপি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। শিগগিরই তার জন্য সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।’

গ্রামের সাধারণ মানুষ মনে করেন, অবিলম্বে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে ফিরোজা বেগমকে একটি ঘর, টিউবওয়েল এবং বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা প্রয়োজন। তা না হলে এই অসহায় বৃদ্ধার মানবেতর জীবনযাত্রা চলতেই থাকবে।