নারায়ণগঞ্জে জুলাইয়ের ৫ হত্যা মামলায় পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন

তদন্তে বাদিকে খুঁজে না পাওয়া, একই ঘটনার একাধিক থানায় মামলা হওয়া ও প্রকৃত ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানার বাইরে হওয়ায় এসব মামলায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

কামাল উদ্দিন সুমন, নারায়ণগঞ্জ

Location :

Narayanganj
বাংলাদেশ পুলিশ
বাংলাদেশ পুলিশ |নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের হওয়া পাঁচটি হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ। তদন্তে বাদিকে খুঁজে না পাওয়া, একই ঘটনার একাধিক থানায় মামলা হওয়া ও প্রকৃত ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানার বাইরে হওয়ায় এসব মামলায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইতোমধ্যে আদালত এসব প্রতিবেদনের অনুমোদনও দিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার রাকিব হত্যা মামলা, ফতুল্লা থানার রিয়াজ হত্যা মামলা, ফতুল্লার কিশোর ইব্রাহিম হত্যা মামলা, সোনারগাঁ থানার কিশোর জনি হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা এবং সোনারগাঁ থানার ইব্রাহিম হত্যা মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট ঘটনাস্থলের থানায় নতুন করে মামলা রুজু করা হয়।

রাকিব হত্যা মামলা-

ভোলার চরফ্যাশনের হাশেম মিয়ার ছেলে রাকিব আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা হয়। পরে তদন্তে জানা যায়, প্রকৃত ঘটনাস্থল ছিল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী। ফলে সিদ্ধিরগঞ্জের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে যাত্রাবাড়ী থানায় নতুন মামলা রুজু করা হয়।

রিয়াজ হত্যা মামলা-

ভোলার দৌলতখাঁনের আব্দুর রবের ছেলে রিয়াজ নিহত হলে ফারজানা নামে এক নারী বাদি হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। তদন্তে বাদির সাথে ভিকটিমের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তিনি মামলার অগ্রগতিতেও অনীহা প্রকাশ করেন। ফলে ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। পরে নিহতের বাবা আব্দুর রব বাদি হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় নতুন মামলা করেন।

ইব্রাহিম হত্যা মামলা-

সিলেট কোতোয়ালীর হানিফ মিয়ার ছেলে কিশোর ইব্রাহিম আন্দোলনের সময় নিহত হন। ঘটনাস্থল ছিল যাত্রাবাড়ী, তবে প্রথমে ফতুল্লা ও পরে সোনারগাঁ থানায় মামলা হয়। তদন্তে প্রকৃত স্থান যাত্রাবাড়ী হওয়ায় উভয় মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। পরে নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন।

জনি হত্যা মামলা-

সোনারগাঁয়ের ইয়াসিন মিয়ার ছেলে জনি (১৭) কাঁচপুর ব্রিজ এলাকায় আন্দোলনের সময় গুলিতে প্রাণ হারায়। প্রথমে সোনারগাঁ থানায় মামলা হয়। তবে তদন্তে ঘটনাস্থল সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় হওয়ায় সোনারগাঁ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। পরে নিহতের বা ইয়াসিন মিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দাখিল করেন।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৮টি হত্যা মামলা এবং হত্যাচেষ্টা ও অন্যান্য অভিযোগে আরো ৫২টি মামলা হয়েছে। মোট ১০০টি মামলার তদন্তকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে দু’টি মামলায় ইতোমধ্যে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। বাকি মামলাগুলোতেও যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’