রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরে গুলি করে দুইজনকে হত্যায় জড়িত কাঁকন বাহিনীর প্রধান কাঁকনসহ অনুসারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরের দিকে এলাবাসীবাসীর ব্যানারে বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর বাজারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
সম্প্রতি আমান মন্ডল ও নাজমুল মন্ডলকে গুলি করে হত্যাসহ মুনতাজ মন্ডল ও রাবিক হোসেনকে আহত করার প্রতিবাদ এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
এসময় হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহতের বাবা-মাসহ স্বজনরা হত্যার বিচার চেয়ে নিজেরা অঝোরে কেঁদেছেন। চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি অন্যরাও।
মানববন্ধনের ব্যানারের এক পাশে নিহত ও আহদের ছবি এবং আরেকপাশে হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনের ছবি সাঁটিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান তারা। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
উপজেলার নীচ খানপুর গ্রামের নিহত আমান মন্ডলের বাবা মিনাজ মন্ডল বলেন, দিন দুপুরে গুলি করে আমার ছেলেসহ নাজমুল মন্ডলকে হত্যাসহ মুনতাজ মন্ডল ও রাবিক হোসেনকে গুরুতর আহত করার পরেও আসামিরা এখানো গ্রেফতার হয়নি। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেনের ভাষ্য, হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন পার হলেও মূল আসামিদের ধরতে না পারা রহস্যজনক।
খানপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ মন্ডল বলেন, হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার করলে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা যাবে।
নিহত শিকার নাজমুলের বাবা শুকুর মন্ডল মানববন্ধনে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আর কিছু বলতে পারেননি। তারা হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।
জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর রাজশাহীর বাঘা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের চৌদ্দ হাজার মাঠ নামে পরিচিত চাকলার চর এলাকায় কাশবন/খড়ের ক্ষেত নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নীচ খানপুর গ্রামের মিনাজ মন্ডলে ছেলে আমান মন্ডল (৩৬), শুকুর মন্ডলের ছেলে নাজমুল মন্ডল (২৬), চান মন্ডলের ছেলে মুনতাজ মন্ডল (৩২) ও আশরাফ মন্ডলের ছেলে রাবিক হোসেন (১৮)।
এদের মধ্যে আমান মন্ডল ও নাজমুল মন্ডল মারা যান। অপর দুইজন রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চান মন্ডল জানান, নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তারা বর্তমানে বাঘা উপজেলার নীচ খানপুর গ্রামে বসবাস করছেন।
রাজশাহীর বাঘা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের চৌদ্দ হাজার মাঠ নামে পরিচিত চাকলার চর এলাকায় তাদের পৈত্রিক জমি রয়েছে। সেই জমিতে তারা কাশবনের খড় কাটছিলেন। কথিত ‘কাকন বাহিনী’র লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেই জমি দখলে নিতে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ চারজনের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন।
এ ঘটনায় বাহিনীর প্রধান দৌলতপুর থানার মাঝদিয়াড় বৈরাগী চরের জমির উদ্দীন মাস্টারের ছেলে হাসানুজ্জামান ওরফে কাকন ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২০/৩০ জনকে আসামি করে নিহত আমান মন্ডলের বাবা মিনাজ মন্ডল দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) সরকারি মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।



