পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বগুড়া পাড়া এলাকার পাশ ঘেঁষে পাথরাজ নদীর হিংস্রতায় মাথায় যেনো হাত পরেছে স্থানীয়দের। নদী ভাঙনে নদীর পারের মানুষের দুর্বিষহ জীবনযাপন। ক্ষুব্ধ হয়ে এর পরে আর কোনো নির্বাচনে কাউকে ভোট না দেয়ার হুমকি এলাকাবাসীর।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় একজনের থাকার ঘর অর্ধেক নদীতে চলে গেছে আর অর্ধেক সরিয়ে নিয়ে চলাচলের রাস্তা করে দিয়েছেন।
নদী ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদী জমির সাথে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এলাকার পাঁচটি গ্রামের চলাচলের রাস্তা। নদীতে বিলীন হয়েছে মসজিদ, মাদরাসা, ঈদগাহ, মাজারসহ খেলার মাঠ। বিগত বছরগুলোতে নদীপাড়ের মানুষের জানমাল রক্ষায় সংসদীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনী ইশতেহার থাকলেও তা আর দৃশ্যমান হয়নি কখনো। যা শুধু ছিল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের দ্বারা জনসাধারণের কাছে দেয়া মিথ্যা আশ্বাস ও নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরিকল্পনা।
তাই এবার আর মৌখিক কথায় না, আগে সমস্যার সমাধান চান ওই এলাকার বসবাসরত প্রায় দুই হাজার ভোটার। না হলে প্রার্থীদের ওই এলাকার ভোটের আশা বাদ দিতে বলেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এর আগেও শিশুকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো করে নদীপাড়ের স্থানীয়দের দেয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাপজোক করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু তার পরে আর নদীর তীর রক্ষায় নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।
এদিকে, চলাচলের রাম্তা না থাকায় অন্যের থাকার ঘরের অংশ সরিয়ে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করতে দেখা গেছে। অনেকেরই নিজেদের পরিবার-পরিজন থাকার নেই কোনো ঘর।
তাই নিজেদের বাকি সম্পদটুকু টিকিয়ে রেখে জীবন চালাতে চান স্থানীয়রা। ভাঙ্গন রোধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা এলাকাবাসীর।
নদীপাড়ের রাসেল জানান, ‘আমাদের এই পাথরাজ নদীর পাশে বাড়ি আমাদের আবাদি জমি, মসজিদ, চলাচলের রাস্তাসহ অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছে বগুড়া পাড়া মানুষ। আমরা এর আগে অনেক নেতার পিছে ঘুরেও কোনো সমাধান পাইনি।’
আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমাদের এই পাথরাজ নদী পূর্বপুরুষের স্মৃতিটুকু নিয়ে গেছে। এখন আর আমাদের যেটুকু সম্পদ আছে নদীতে চলে যাচ্ছে আমরা কি সরকারি কোনো সহযোগিতা পাব না? পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে গরু, ছাগলের দড়ি দিয়ে মাপজোক করে চলে যায়, আর আসে না। এভাবে আর কত বাড়ি জমি, নদীতে গেলে আমরা সরকারি সহযোগিতা পাব?’
যত দ্রুত সম্ভব এই নদী ভাঙন রোধ করে শান্তিতে একটু ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।