জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

জাবিপ্রবি’তে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তি

‘তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের আলোকে ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ৪৫ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।’

সাদিকুর রহমান রোমান, মেলান্দহ (জামালপুর)

Location :

Melandaha
জাবিপ্রবি’তে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তি
জাবিপ্রবি’তে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তি |নয়া দিগন্ত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনে বাধাগ্রস্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চার জনসহ ৪৫ শিক্ষার্থী ও ৬ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: নুর হোসেন চৌধুরী।

জাবিপ্রবির প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ১৬তম সভায় ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৪৫ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ভাবে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শাস্তিপ্রাপ্ত ৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নয়জন ছাত্রী ও ৩৬ জন ছাত্র। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে গুরুতর অপরাধে জড়িত ২১জন এবং অপেক্ষাকৃত কম অপরাধে জড়িত ২৪জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। গুরুতর অপরাধে জড়িতদের মধ্যে জাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাওসার আহমেদ স্বাধীন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক-১ তাইফুর ইসলাম পলাশকে ৫ (পাঁচ) বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাত সৌরভ, মোকাররম হোসেন, মোশারফ হোসেন, আভিমান সরকার, সেবক দাস, মাসুদ রানা, ইতিসার সানি ইমন, ছাত্র হল শাখার সাধারণ সম্পাদক সাকলাইন এবং ছাত্রী হল শাখার সভাপতি ঐশীসহ যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক সম্পন্ন করেছেন তাদের সনদপত্র স্থগিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখানো ছাত্রলীগ নেত্রী প্রিয়া সরকার, ছাত্র হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম ইমন এবং ছাত্রলীগ আহ্বায়ক স্বাধীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন সাবাসহ মোট ৭ (সাত) জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এই গুরুতর অপরাধে জড়িতদের একইসাথে বহিষ্কার/সনদ স্থগিত, হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, সিট বাতিল, তিরস্কার ও মুচলেকা প্রদানের শাস্তি দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত লঘুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৪ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সিট বাতিল ও তিরস্কার করা হয়েছে। একই সাথে তাদের মুচলেকা দিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- সহকারী রেজিস্ট্রার আনিসুজ্জামান, প্রকৌশলী শহীদুজ্জামান, সেকশন অফিসার রাসেল মাহমুদ ও মোতাব্বির হোসেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মির্জা হালিম ও সাবেক ভিসির ব্যক্তিগত সহকারী সোহাগ সরকার।

জাবিপ্রবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে কিছু বাদ পড়েছে। কিছু শিক্ষকদের এখনো বিচার হয় নাই৷ শিক্ষকের বিচার যেনো দ্রুত করা হয়। কিছু কর্মচারী বাকি আছে তাদের যেনো বিচারের আওতায় আনা হয়।’

জাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার মো: নুর হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের আলোকে ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ৪৫ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।’