বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দীর্ঘ ২৫ বছর পরে আওয়ামী দখলবাজদের কবল থেকে ১১২ বিঘা জমির দখল ফিরে পেয়েছেন জমির মালিকেরা।
দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের গাজীরঘাট গ্রামের ওই ১১২ বিঘা জমি একটি প্রভাবশালী মহল ২০০১ সালে একই গ্রামের হাদিস গাজীর নেতৃত্বে দখল করে নিয়ে চাষাবাদ ও ঘের করে আসছিল।
জুলাই বিপ্লবের ফলে গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয় পট পরিবর্তনের পরে হাদিস গাজীসহ তার বাহিনীর লোকজন পালিয়ে গেলে জমির মালিকরা সাইনবোর্ড পুঁতে ও ঘেরাবেড়া দিয়ে জমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন।
দখলের খবর পেয়ে পলাতক হাদিস গাজী ও তাদের বাহিনীর লোকজন রাতের আঁধারে এলাকায় ফিরে আবার ওই জমি দখলের চেষ্টায় দু’দফা হামলা করে সাতজনকে আহত করে। মারপিটের এ মামলায় হাদিস গাজী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
হামলার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী জমির মালিকেরা রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে বিবদমান জমিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
সমাবেশে জমির মালিক মনোয়ারা বেগম, কহিনুর বেগম, আশ্রাফ শেখ, আনসার সরদার, সুলতান শেখ, রুমা খানম, ওয়ার্ড মেম্বর অহিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। তারা পলাতক প্রতিপক্ষের গুপ্ত হামলায় খুন-জখমের আশঙ্কার কথা জানান।
এ বিষয়ে কহিনুর বেগম নামে একজন জমির মালিক বিভিন্ন দফতর ও প্রেসক্লাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ‘২০০১ সালের ১৮ জন বেলা ১০টার দিকে কহিনুর বেগমের স্বামী সোহরাফ শেখকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে ৪টি বসতবাড়ি পুড়িয়ে সকলকে এলাকা ছাড়া করে তাদের ১১২ বিঘা জমি দখল করে নেয় হাদিস গাজী ও তার বাহিনীর লোকজন।
কহিনুর বেগম পালিয়ে থেকে তার স্বামীর হত্যার বিচারের জন্য ৩৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলার বিচারে জেলা জজ আতাহার আলী ওরফে পরান বাবু, কালা বাবুল ও বাদশা শেখের ফাঁসির আদেশ, পিকলু সরদারসহ ১১ জনের যাবজ্জীন ও হাদিস গাজীসহ ১৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দেন।
আসামিরা রায় চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করলে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পূর্বের রায় বহাল রাখেন। পরে গত ৬ এপ্রিল হাদিস গাজী ও তার লোকজন এলাকায় ফিরে দুই দফা হামলা করে একজন সেনা সদস্যসহ ৭-৮ জনকে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাদিস গাজী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: রাকিব আল হাসান বলেন, ‘বেদখল থাকা কিছু জমি কহিনুর বেগম ও তার লোকজন সম্প্রতি নিজেদের দখলে নিয়েছেন। ওই জমিগুলো কিভাবে বেদখল হয়েছিল তা তার জানা নেই। এলাকায় শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।’



