ভোলায় পৃথক পাঁচটি দুর্ঘটনায় চার শিশুসহ ছয়জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় প্রতিটি লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পৃথক পাঁচটি দুর্ঘটনায় পুলিশ এ ছয়টি লাশ উদ্ধার করে।
এরমধ্যে লালমোহন উপজেলায় তিনটি, চরফ্যাশন উপজেলায় দু’টি, অপরটি লাশ তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে পানিতে ডুবে মারা গেছে তিন শিশু, এক যুবক ও আরেক বৃদ্ধ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। অপর আরেকজন শিশু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ এবং বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরের দিকে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চর কালাচাঁদ গ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে দেড় বছর বয়সী নাফিজা আক্তার ও তার চাচাত ভাই দু’ বছর বয়সী মিনহাজ মারা যায়। দুপুরে পরিবারের সকলে ঘরে ভাত খাচ্ছিল। এ সময় তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ওই দু’ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়।
একই উপজেলার পৌরসভা গেইট এলাকায় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মোটরসাইকেল চাপায় আবুল কালাম নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তিনি পৌর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
একই সময় চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট এলাকায় ট্রলির ধাক্কায় রাসেল (২৮) নামের এক এনজিও কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। রাসেল উপজেলার শশিভূষণ থানা এলাকার আবুল খায়ের হাওলাদারের ছেলে।
এছাড়াও সকাল ৬টার দিকে উপজেলার আবু বক্করপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজার এলাকা থেকে আফিয়া নামের আট বছর বয়সী এক শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটি ওই এলাকার ফয়সাল আহমেদের মেয়ে।
শিশুটির দাদা সিরাজুল ইসলাম জানান, শিশুটির মায়ের সাথে প্রায় পাঁচ বছর আগে তার বাবার বিচ্ছেদ হয়। এরপর শিশুটি তার মায়ের সাথেই থাকতো। শুক্রবার রাতে শিশুটি তার মায়ের কাছে ঈদে নতুন জামা চেয়েছিল। মা নতুন জামা কিনে না দেয়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে শিশুটি ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবার দাবি করছে।
একই সময় তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পুকুরের পানিতে ডুবে মুশফিকা নামের দেড় বছর বয়সী আরেকটি শিশু মারা যায়। শিশুটি ওই ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে।
লালমোহনের তিনটি মৃত্যুর বিষয়ে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তিনটি লাশই পরিবারের কাছে আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এছাড়াও চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, শিশু আফিয়া ও এনজিও কর্মী রাসেলের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তজুমদ্দিন থানার ওসি মোহাব্বত আলী খান জানান, পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিশু মুশফিকার মৃত্যু নিয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়ায় শিশুটির লাশ তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।