কিশোরগঞ্জ হাওরে ঝড়ো বাতাসে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

‘নিকলীর উজান এলাকার রাখালসহ জেলে ও কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই বৈরি আবহাওয়াতে বজ্রপাতের ভয়ে তারাও মাঠে যাচ্ছেন না।’

আলি জামশেদ, নিকলী (কিশোরগঞ্জ)

Location :

Kishoreganj
ঝুঁকি নিয়ে রাখালরা গরু নিয়ে ফিরছে
ঝুঁকি নিয়ে রাখালরা গরু নিয়ে ফিরছে |নয়া দিগন্ত

কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরসহ উপজেলার আশপাশের বিভিন্ন হাওর এলাকায় টানা ৭২ ঘণ্টার ঝড়ো বাতাস ও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের কারণে গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুৎ সেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এ ঘটনায় ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রয়েছে অনেক জায়গায়।

এছাড়া বেকায়দায় পড়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চালকরা। হাওরের রাস্তায় মিলেছে না কোনো গাড়ি। বিপাকে পড়েছে স্থানীয় যাত্রীরা। বিদ্যুত না থাকায় বিপাকে পড়েছে গৃহিণীরাও। এমনি তথ্য তুলে ধরেন হাওর এলাকার বাসিন্দারা।

অনেককেই বলছেন, আকাশের অবস্থা একটুখানি বেগতিক হলেই হাওর এলাকার বিদ্যুৎসেবা। ঝড়ো হাওয়ার অজুহাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। বর্তমানে বৃষ্টির মৌসুমে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিকলীর উজান এলাকার রাখালসহ জেলে ও কৃষকরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই বৈরি আবহাওয়াতে বজ্রপাতের ভয়ে তারাও মাঠে যাচ্ছেন না।

নিকলী উপজেলার আঠারবাড়িয়া এলাকার সাবেক সেনা বাহিনীর কর্মচারী হুমায়ূন এবং একই এলাকার সাফি মিয়াকেও মাঠ থেকে সকালে বৃষ্টি ভেজা অবস্থায় গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় বলেন, ‘গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াতে হবে তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাওরে গিয়েছিলেন। বিকল্প উপায়ে বাজার থেকে কিনে কৃত্রিম খাবার খাওয়ালে এসব গরু লালন-পালনে তাদের খরচ বেশি হয় বলে জানান তিনি।

টানা প্রায় ৭২ ঘণ্টা বৈরি আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ অফিসেও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

হাওরের সচেতন মহল থেকে শুরু করে সর্বসাধারণের মতে, বজ্রপাত রোধে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সেখানকার জেলে ও কৃষকদেরকে ঝুঁকি ও আতঙ্ক নিয়ে দিন-রাত পার করতে হয়। পাশাপাশি উন্নত দেশের মতো বৈদ্যুতিক সংযোগ বিষয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে দূরদর্শী ভাবনা নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে বৈরি আবহাওয়াতেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের ঘটনা কমে আসবে। কমে আসবে মৃত্যুর ঝুঁকিও।

বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে দেশে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেইসাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুৎ বিভাগে জড়িতদের বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা।