রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে ঝুঁকি মোকাবেলায় যৌথ নিরাপত্তা মহড়া

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মহড়া ‘এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ–২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আব্দুল আউয়াল, রাজশাহী ব্যুরো

Location :

Rajshahi
রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে ঝুঁকি মোকাবেলায় যৌথ নিরাপত্তা মহড়া
রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে ঝুঁকি মোকাবেলায় যৌথ নিরাপত্তা মহড়া |নয়া দিগন্ত

রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মহড়া ‘এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ–২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরের এপ্রোন এলাকায় অনুষ্ঠিত এই মহড়ায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো: মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক।

এসময় তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মহড়া দুর্বলতা শনাক্ত, আন্তঃসংস্থার সমন্বয় বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

তিনি জানান, সমন্বিত দক্ষতা থাকলে যেকোনো অনভিপ্রেত পরিস্থিতি দ্রুত ও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।

ঢাকার বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে চেয়ারম্যান মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, গত ১৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের সময় এভসেক, বিমানবাহিনী টাস্কফোর্স, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, এপিবিএন, পুলিশ ও আনসারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় কার্গো টার্মিনাল থেকে টার্মিনাল-৩ পর্যন্ত সব এলাকায় নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছিল।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের মতো পরিস্থিতিতে চুরি, লুট বা নাশকতার ঝুঁকি থাকলেও সেদিন নিরাপত্তা বাহিনীর পেশাদারিত্বের কারণে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি, যা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।’

প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী সব সংস্থার প্রস্তুতি ও দক্ষতা প্রত্যক্ষ করে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সংস্থা প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। জাতীয় স্বার্থে আরো নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

মহড়ার দৃশ্যপটে দেখানো হয়—যশোর বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে বোমা থাকার হুমকি আসে। শাহ মখদুম বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারে কল পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সক্রিয় করেন। পরে রিস্ক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা যৌথভাবে জরুরি প্রতিক্রিয়া কার্যক্রম পরিচালনা করে।

মহড়ায় অংশ নেয়— বেবিচক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র‍্যাব, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজসহ আরো কয়েকটি সংস্থা।

অনুষ্ঠানের অন-সিন কমান্ডার ছিলেন বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক মোসা: দিলারা পারভীন। চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মো: আসিফ ইকবাল।

উপস্থিত ছিলেন—বেবিচকের সদস্য (প্রশাসন) এস এম লাবলুর রহমান, সদস্য (অর্থ) মোহাম্মাদ নাজমুল হক, সহকারী পরিচালক মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক মোসা. দিলারা পারভীন বলেন, ICAO SARPs ও NCASP অনুযায়ী প্রতি দুই বছরে একবার এমন মহড়া আয়োজন বাধ্যতামূলক।

তিনি জানান, রাজশাহীর একমাত্র বিমানবন্দর হিসেবে শাহ মখদুম বিমানবন্দর থেকে বর্তমানে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস ও বাংলাদেশ বিমান তাদের বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসী হুমকি, হাইজ্যাক, বোমা হামলা ও অন্যান্য ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা যাচাই এবং অংশীজনদের প্রস্তুতি বাড়াতেই এ মহড়ার আয়োজন করা হয়।