নীলফামারীর সৈয়দপুরে মুন্সিপাড়া রেলওয়ে কলোনির দর্জি পট্টি রোডে থেকে এক নারীর উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, ওই রেলওয়ের কোয়ার্টার দখল করে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছে নীলফামারী সদর উপজেলার পূর্ব চাপড়া এলাকার মরহুম জামালের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৪৮)। শহরের কিছুক্ষণ মোড় ও রেল লাইনের পাড়ে অস্থায়ী দোকান দিয়ে চটপটি বিক্রি করতেন। তার স্ত্রী ও ছেলে চট্টগ্রামে থাকে।
মঙ্গলবার সকল ১১টার দিকে জাহিদুলের স্ত্রী রোকসানা মোবাইল করে পাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দা সেলিনাকে বলেন, ‘আমাদের বাসায় একজন মহিলার লাশ রাখা আছে। দাফনের ব্যবস্থা করেন। মহিলার পুরো পরিচয় আমরা জানি না। আমার স্বামী ভয় পেয়ে চট্টগ্রামে চলে এসেছে। এরপর থেকে জাহিদুল ও তার স্ত্রীর মোবাইল বন্ধ।’
সেলিনা বলেন, এরপর আমি বিষয়টা এলাকার ঠিকাদার আতিকুল ইসলামকে জানাই। পরে তিনিসহ এলাকাবাসী মিলে এসে দেখি কোয়ার্টারের গেটে তালা দেয়া। পেছনে গিয়ে জানালা দিয়ে দেখার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তবে খুব দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। আতিকুল ভাই পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঢুকে দেখি মেঝেতে অর্ধ গলিত লাশ পড়ে আছে।
পুলিশ সুরতহাল তদন্তকালে সেলিনাকে মোবাইল করে জাহিদুল ইসলাম জানায়, ‘মহিলার নাম আলমা (৪০)। বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে। এর বেশি কিছু জানি না। গত কয়েকদিন থেকে সে নিয়মিত রেল লাইনের পাড়ে আমার দোকানে আসে এবং রাত পর্যন্ত অবস্থান করে। শনিবার রাতে আমি দোকান বন্ধ করে বাসায় এলে সে আমার পিছু নেয় এবং জোর করেই ঘরে ঢুকে। বাধ্য হয়ে তাকে রাতে বাসায় থাকতে দেই। রাত ২টার দিকে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এতে আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। সকাল পর্যন্ত কোনোকিছু ভেবে না পেয়ে লাশ রেখে পালিয়েছি। আমি হত্যা করিনি। লাশের ময়নাতদন্ত করে দেখতে পারেন। তখন দোষী সাব্যস্ত হলে আমি মাথা পেতে নেব। এই বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং বন্ধ করে দেয়।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। প্রতিবেদন এলেই বোঝা যাবে এটা হত্যা, আত্মহত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু। এ বিষয়ে আইনিব্যবস্থা নেয়া হবে। লাশের বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।