হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের পূর্ব সুন্দরপুর গ্রামে রিমা আক্তার (২৪) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠেছে। নিহতের স্বামী মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।
রোববার (১৭ আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানার এসআই জিকরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই নিহতের স্বামী মুজিবুর রহমান, বাবা রজব আলী, মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত ভাবি রুজিনা বেগমসহ দুই নারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও পরকীয়া প্রসঙ্গ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে প্রবাস থেকে দেশে ফেরেন মুজিবুর রহমান। দেশে ফেরার পর থেকেই স্ত্রী রিমার সাথে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। শনিবার রাতে মুজিবুর রহমানের পরকীয়া নিয়ে গ্রামে সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় তিনি অপমানিত বোধ করেন।
নিহতের চাচা কাউছার মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাতিজি রিমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারপর নাটক সাজাতে লাশ সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
নিহতের মা সুফিয়া বেগমও একই অভিযোগ করে বলেন, ‘মুজিবুর রহমানের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল তার ভাবি রুজিনার সাথে। এ নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে রিমা ও মুজিবুরের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। আমার মেয়েকে নির্যাতন করে অবশেষে মেরে ফেলা হয়েছে।’
নিহত রিমা আক্তারের স্বজনরা জানান, তিন বছর আগে খাজিরখিল গ্রামের মুদিমাল ব্যবসায়ী মহিবুর রহমানের ছেলে সু্ন্দরপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে, মুজিবুর রহমানের সাথে চার লাখ টাকা কাবিনে রিমার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে রয়েছে দুই জমজ মেয়ে শিশু- সায়মা (২) ও সাবিহা (২)।
এদিকে রিমার মৃত্যুর খবরে হাজারো মানুষ নিহতের বাড়িতে ভিড় জমায়। অনেকেই এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে অভিযুক্ত স্বামী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’