বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুনীতি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কমিটি বাণিজ্য ও একক আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অভিযোগ এনে নওগাঁয় জেলাসহ ১১টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মী একযোগে পদত্যাগ করেছেন।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে নওগাঁ শহরের প্যারীমোহন লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণঅধিকার পরিষদ নওগাঁ জেলা শাখার সহ-সভাপতি এবাদুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সহ-সভাপতি আখতারুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান, ছাত্র অধিকার পরিষদ নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি শাকিব খানসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী।
লিখিত বক্তব্যে এবাদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, যে আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতার আলোকে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়েছিল, বর্তমানে তা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্যুত হয়েছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। যারা মাঠে-ময়দানে সংগঠনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বরং নেতাকর্মীদের সাথে স্বৈরাচারী আচরণ করা হচ্ছে, যা অগণতান্ত্রিক ও অপমানজনক।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেন হয়েছে। আবার কোনো কর্মসূচি করতে হলে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে জেলা থেকেই অর্থ সংগ্রহ করতে বলা হয়, যা একপ্রকার চাপ ও অবিচার। নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলে যাত্রা শুরু হলেও এখন পুরনো ধ্যান-ধারণা ও আচরণেই চলছে সব কিছু। শুধু নওগাঁ নয়, রাজশাহী বিভাগ থেকেও সংগঠনের ক্ষতি করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি নাম উল্লেখ করে বলেন, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য আমিনুল ইসলাম মাসুদ এবং যুব অধিকার পরিষদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ সম্পাদক এস এম সাব্বির নানা অনৈতিক কাজে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমান নেতৃত্ব সংগঠনকে মূল উদ্দেশ্য ও পথ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তাই আত্মমর্যাদা, রাজনৈতিক আদর্শ ও তৃণমূল কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই শতাধিক নেতাকর্মী গণঅধিকার পরিষদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, দলের অভ্যন্তরে মতামতের কোনো মূল্য নেই; উপর থেকে একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি নওগাঁ জেলা গণঅধিকার পরিষদের উপকমিটি গঠন করা হলেও তাদের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, যা উপকমিটিও জানত না। মূল সংগঠন গণঅধিকার পরিষদ হলেও নিয়ন্ত্রণ করছে অঙ্গসংগঠন যুব অধিকার পরিষদ, যা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী।