ইছামতি নদী রক্ষা চান এলাকাবাসী

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার খানেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এক সভায় আয়োজন করেন খানেপুর গ্রামবাসী। এ সময় নদীপ্রেমী কয়েকটি গ্রামের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শওকত আলী রতন, দোহার (ঢাকা)
আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নদীর বর্তমান অবস্থা দেখছেন
আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নদীর বর্তমান অবস্থা দেখছেন |নয়া দিগন্ত

ইছামতি নদী রক্ষা চান এলাকাবাসী। এ লক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার খানেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এক সভায় আয়োজন করেন খানেপুর গ্রামবাসী। এ সময় নদীপ্রেমী কয়েকটি গ্রামের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শেষে অতিথিরা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নদীটির বর্তমান অবস্থা দেখেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, এক সময়ের স্রোতস্বিনী ইছামতি এখন মৃতপ্রায়। এ নদীর সাথে কয়েক লাখ মানুষের জীবিকার সম্পৃক্ততা রয়েছে। কিন্তু পানির প্রবাহ স্থবির হওয়া, দখল, দূষণ ও কচুরিপানায় ভরে যাওয়ায় এ নদীর পানি এখন আর মানুষের উপকারে আসে না।

অনুষ্ঠানে নৌকাবাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, ‘এক সময়ের ইছামতি এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। হারিয়েছে স্বাভাবিক নাব্যতা, দূষণ আর দখলে নাস্তানাবুদ। কচুরিপানায় গ্রাস করেছে ছলাৎ ছলাৎ চলার ছন্দ। তবুও অবলা ইছামতি জানান দেয় নিঃসঙ্কোচে চলার অপারগতা। ভরা বর্ষায় নদীতে পানি থাকলেও গ্রীষ্মে যেন মরা খাল। নদীর পাড়ে গড়ে উঠা হাট-বাজারের সব বর্জ নদীতেই ফেলা হচ্ছে। এমনকি ক্লিনিকের বিষাক্ত বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে নদীতে। গত কয়েক বছর ধরে উৎসব ছড়ানো নৌকাবাইচের মতো অনুষ্ঠান হতে পারছে না। ইছামতি রক্ষায় কাজ করছে কয়েকটি সামাজিক সংগঠন। প্রতি বছরই দখল-দূষণের হাত থেকে রক্ষার জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করে আসছে। উপজেলার প্রশাসনের কাছে একাধিকবার স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। কচুরিপানার জন্য নৌকাবাইচের মতো উৎসব হতে পারছে না এ নদীতে। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই নৌকাবাইচের আগেই কচুরিপানা পরিষ্কার করার। বিগত সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি, যা খুবই দুঃখজনক বলে মনে করি।’

খানেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘এ নদীকে আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে কাশিয়াখালীতে যে বাঁধ দেয়া হয়েছে সেই বাঁধের মুখ খুলে দিতে হবে। তাহলে সরাসরি পদ্মা থেকে পানি প্রবেশ করতে পারলে স্বাভাবিক নাব্যতা ফিরে পাবে।’

সমাজকর্মী মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ইছামতি নদীতে বিনোদনের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে পাঁচটি নৌকা প্রস্তুত রয়েছে। যেখানে বিনামূল্যে নৌকায় ভ্রমনের সুযোগ পাবে দর্শনার্থীরা। কচুরিপানামুক্ত হলে এ নৌকাগুলো উন্মুক্ত করা হবে খুব শিগগিরই।’

অনুষ্ঠানে দেওতলা, খানেপুর, আলালপুর, মাঝিরকান্দা, গোবিন্দপুর ও রামনগর ও বান্দুরা এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।

Topics