চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দোকানে পা তুলে বসায় বাগবিতণ্ডা পরে সংঘর্ষে গাজী তাহমিদ খান (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। পরে তাহমিদকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থার তার মৃত্যু হয়।
নিহত তাহমিদ বারইয়ারহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাসচালক আলমগীরের তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে। তাহমিদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য ও নিরাপদ সড়ক চাই মিরসরাই উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক।
জানা গেছে, বুধবার বিকেলে বারইয়ারহাট পৌর বাজারে একটি দোকানে পায়ের উপর পা তুলে বসে ছিলেন হিঙ্গুলী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জুবায়ের। ওই সময় বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটনকে দেখে পা নামিয়ে না বসায় লিটন জুবায়েরকে লাথি মারেন। এরপর উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা চলে যান। পরবর্তীতে লিটন ও জুবায়ের নিজ নিজ এলাকা জামালপুর ও হিঙ্গুলীর লোকজন নিয়ে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তাহমিদ, রায়হান, মোহন দে, আবির, মোজম্মেলসহ ৮-১০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন মেডিক্যালে প্রেরণ করা হয়। গুরুতর আহত তাহমিদকে প্রথমে বারইয়ারহাট মেডিক্যাল সেন্টারে নেয়া হয়। শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
বারইয়ারহাট পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোহন দে বলেন, বুধবার বিকেলে লিটন ভাইয়ের সাথে জুবায়েরের ঝামেলার বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমরা কয়েকজন মিলে ট্রাফিক মোড়ে যাই। সেখানে যাওয়ার পর কথা বলার একপর্যায়ে লিটন ভাইয়ের জামালপুর এলাকার লোকজন আমাদের উপর হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাহমিদ কখন সেখানে গেছে বলতে পারি না। সে আমাদের এলাকার হওয়ায় তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে রাত ১২টার দিকে চমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তাহমিদের বাবা আলমগীর বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলেকে এভাবে মেরে ফেললে? ও তো কোনো দোষ করেনি। যদি দোষ করে থাকে, তাহলে আমি বিচার করতাম। শেষ করে দিতে হবে? আমি এখন কী বাঁচবে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘ঘটনার আগে এলাকায় সামান্য ছেলেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় যুবায়েরের সাথে আমার হাতাহাতি হয়। এরপর তারা বারইয়ারহাট চলে যায়। সেখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এরপর কী হয়েছে আমার জানা নেই। অভ্যন্তরীণ পূর্বশত্রুতার জেরে এমনটা ঘটতে পারে।’
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক বলেন, জুনিয়র-সিনিয়র দ্বন্ধে বিএনপির একই গ্রুপের দু’টি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাহমিদ নামে একজন নিহত হয়েছে। তার লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বাড়ি নেয়া হবে। এই ঘটনায় থানায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি।



