জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন দিতে হবে : সেলিম উদ্দিন

সকল অংশীজনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করে পিআর পদ্ধতিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Dhaka City
জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন দিতে হবে : সেলিম উদ্দিন
জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন দিতে হবে : সেলিম উদ্দিন |নয়া দিগন্ত

সকল অংশীজনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করে পিআর পদ্ধতিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মাদানী নগর এভিনিউ-এ ভাটারা থানা জামায়াত আয়োজিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, লেবেল প্লেইং ফিল্ড প্রস্তুত, গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান সহ কেন্দ্র ঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায়ে এক গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

থানা আমির অ্যাডভোকেট রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লা।

এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-১১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১১ আসনের সকল সাংগঠনিক থানা আমির ও সেক্রেটারিরা।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে জনগণ কোনো ভোট দিতে পারেনি। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসন্ন নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে। একই সাথে কালো টাকা ও পেশী শক্তিমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। শুধুমাত্র কথামালার ফুলঝুড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না বরং নির্বাচন যাতে উৎসবমূখর হতে পারে সে জন্য সরকারকে নিতে হবে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ।’

তিনি স্বৈরাচার পরবর্তী দেশের অবস্থা উল্লেখ করে বলেন, ‘ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবে ফ্যাসিবাদীরা দেশ ছেড়ে পালালেও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা তাদের দোসরদের কারণেই দেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। চিহ্নিত একটি মহল এ কাজে ইন্ধন যোগাচ্ছে। ফলে থানা ঘেরাও করে আসামি ছিনতাইয়ের মতো দুঃখজনক ঘটনাও ঘটছে। তাই এসব বিষয়ে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে হবে। অন্যথায় জুলাই বিপ্লব ফল পুরোপুরি ঘরে তোলা যাবে না।’

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন আশাবাদের সৃষ্টি হলেও সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণে সাফল্য নিয়ে নানাবিধ সন্দেহ-সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। পতিত ফ্যাসীবাদীরা নতুন করে মাথাচাঁড়া দিতে শুরু করেছে। দেশে চাঁদাবাজী সহ অপরাধ প্রবণতা বন্ধ হয়নি বরং চাঁদা না দেয়ায় প্রকাশ্য রাজপথে পাথর মেরে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। বিপ্লবোত্তর এ পর্যন্ত প্রায় পৌণে ২শ মানুষকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে পতিতরা ঝটিকা মিছিল করছে। তাই পতিত আওয়ামী লীগের ওপর শুধুই নিষেধাজ্ঞা নয় বরং তাদের দোসর জাতীয় পার্টির সহ অন্যান্য সহযোগিদের নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা যাবে না এবং দেশে শান্তিও প্রতিষ্ঠিত হবে না।’

মহানগরী আমির বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারি ও ফ্যাসিবাদী শক্তি রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। বিগত প্রায় ১৬ বছরে দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন ও তামাশা করা হয়েছে। তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর সংস্কার, মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীদের বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং সে সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আর সে দাবি আদায়ের জন্য আমরা আজ গণসংযোগ করছি। এ লক্ষে আমরা সপ্তাহব্যাপী নানাবিধ কর্মসূচিও পালন করবো।’

তিনি দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারকে গণদাবি মেনে নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান।