শহীদ শুভর মা

ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই

পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় কার্যকর করলে শহীদ পরিবারগুলো প্রকৃত ন্যায়বিচার পাবে।

হুসাইন মালিক, চুয়াডাঙ্গা

Location :

Chuadanga
শহীদ শুভর মা।
শহীদ শুভর মা। |নয়া দিগন্ত

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা হলেও শহীদ প্রকৌশলী শাহরিয়ার শুভর পরিবার এখনো শান্তি পাননি।

শুভর মা চম্পা খাতুন বলেন, ‘রায় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের শান্তি নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় কার্যকর করলে শহীদ পরিবারগুলো প্রকৃত ন্যায়বিচার পাবে।’

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের সাজার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো সন্তানহারা মায়ের কষ্ট কেউ বোঝে না। অন্তত বিচারটা যেন পুরোপুরি দেখি।’

দেড় বছর ধরে সন্তানহারা শোকে ভেঙে পড়া পরিবার এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। শিশু মুহিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে চম্পা খাতুন বলেন, ‘যে সরকারই আসুক, আমার নাতির দায়িত্ব যেন নেয়।’

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মিরপুরে পুলিশের গুলিতে আহত হন প্রকৌশলী শাহরিয়ার শুভ। চারদিন পর তিনি ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে মারা যান। পরদিন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। কৃষক আবু সাঈদের ছেলে শুভ ঢাকার একটি লিফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায় ঘোষণা করে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়। তদন্তে উল্লেখ করা হয়, তাদের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা ও ৩০ হাজারকে আহত করা হয়েছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পাশাপাশি এ মামলার অন্য আসামি হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক।

এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।