ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কনে পক্ষের হামলায় বরের মা নিহত : মামলায় গ্রেফতার ৫

বুধবার সকালে গ্রেফতার করা আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Location :

Brahmanbaria
নয়া দিগন্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পালিয়ে বিয়ে করার জেরে কনে পক্ষের হামলায় বরের মা দীপালি রাণী দাস (৫৫) হত্যা মামলায় পুলিশ পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে গ্রেফতার করা আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় নিহতের ছেলে সবুজ দাস আটজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শহীদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘আমরা দিপালী দাস হত্যা মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে প্রতিবেশী সুকেশ দাসের মেয়ে সুইটি দাসের সাথে শৈলন দাসের ছেলে সবুজ দাসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে সুইটি দাসের পরিবার তা মেনে নিতে পারেনি। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিরোধ দেখা দেয়।

এদিকে প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে দুই বছর আগে সুইটি ও সবুজ আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সুইটির পরিবার তাকে জোরপূর্বক ভারতের ত্রিপুরায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। সেখানে তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে তিনি পালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তাকে ভারতের পুলিশ আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।

বিষয়টি জানতে পেরে সবুজ দাস ত্রিপুরায় তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ করে সুইটিকে জামিনে মুক্ত করে দেশে নিয়ে আসেন। দেশে আসার পর তারা ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিয়ে করেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। পরে সবুজের পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয় সুইটির পরিবার। ফলে সবুজের পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এক মাস আগে তারা বাড়িতে ফিরে।

মঙ্গলবার সকালে সুইটির পরিবারের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এক যুবক সবুজের পিসাকে হুমকি দেয়। দুপুরে দুই পরিবারের মাঝে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে সুইটির ভাই নিলয়সহ আরো কয়েকজন সবুজ দাসের বাড়িতে ঢুকে হামলা করে। এ সময় নিলয়ের ইটের আঘাতে সবুজের মা দিপালী দাস গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান।