টেকনাফের গহিন পাহাড়ে র‌্যাবের অভিযান : মানবপাচার চক্র থেকে ২৪ রোহিঙ্গা উদ্ধার

পাচারকারীরা তাদের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তিন-চার দিন আগে মালয়েশিয়া পাঠানোর আশ্বাসে পাহাড়ে এনে আটক করে রাখে।

Location :

Cox's Bazar
সংগৃহীত

কক্সবাজার অফিস ও উখিয়া সংবাদদাতা

কক্সবাজারের টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারীদের বন্দিদশা থেকে ২৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। উদ্ধার ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন পুরুষ, ১০ জন নারী ও ১০ জন শিশু রয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) ভোররাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শীলখালী এলাকার দুর্গম পাহাড়ে এ অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব-১৫-এর একটি বিশেষ দল।

অভিযান শেষে বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক আ ম ফারুক।

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে সাগরপথে মানবপাচারকারীরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভোররাতে টেকনাফের গহিন পাহাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মালয়েশিয়া নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পাচারের উদ্দেশে রাখা হয়।’

র‌্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া সবাই রোহিঙ্গা শরণার্থী। পাচারকারীরা তাদের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তিন-চার দিন আগে মালয়েশিয়া পাঠানোর আশ্বাসে পাহাড়ে এনে আটক করে রাখে। উদ্ধার ব্যক্তিদের বরাতে জানা গেছে, দালাল চক্রের সদস্যরা উত্তর শীলখালী এলাকার পাহাড়চূড়ায় রোকসানা নামে এক নারীর ঘরে তাদের জোরপূর্বক আটকে রেখেছিল।

এদিকে অভিযান চলাকালে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পাহাড়ের ভেতরে পালিয়ে যায়। তবে তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে টেকনাফ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শীত মৌসুম ঘনিয়ে এলে প্রতি বছরই মানবপাচারকারীরা সাগরপথে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় গরিব মানুষদের মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে। আর্থিক লোভে পড়ে অনেকেই এ দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে জীবন নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় পা বাড়ান।

র‌্যাবের দাবি, সম্প্রতি কক্সবাজার উপকূলজুড়ে সাগরপথে মানবপাচাররোধে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একইসাথে স্থানীয় দালাল চক্রকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।