রাজনীতি করতে হবে মানুষের কল্যাণের জন্য উল্লেখ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘শুধু রাজনীতি করলে তো হবে না, দেশের কথা ভাবতে হবে। জনগণের কাজ করার জন্য জনগণের ভাবনা ভাবতে হবে। ফ্যাক্টরি বাড়ানোর জন্য রাজনীতি করলে হবে না।’
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে (৭ নভেম্বর) লৌহজং উপজেলার হলদিয়া শিমুলিয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনগণের রাজনীতি করি, জনগণকে নিয়েই নির্বাচন করবো। আপনাদের কাছে এসেছি। আপনাদের সাথে নিয়েই থাকতে চাই। এখনো অনেক কাজ বাকী আছে। জনগণের অধিকার নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলেছে, যারা জনগণের পক্ষে কাজ করে নাই, সে যেই হোক তাকে ভোট দেওয়ার দরকার নাই।
জাতীয় নির্বাচন দেশে খুব জরুরি মন্তব্য করে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন আরো বলেন, জাতীয় নির্বাচন দেশে অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে, বাধাগ্রস্ত হবে ও বিপন্ন হবে। অত্যন্ত দু:খের বিষয় আমরা লক্ষ করছি কয়েকটি রাজনৈতিক দল নানা সময়ে নিত্য নতুন কথা বলেছেন। নানা দফা দাবি তুলে তারা নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করছেন। এতে মানুষের মধ্যে একটি শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন সঠিক সময় হবে কিনা। একবার বলে পিআর আবার বলে গণভোট। গণভোট তো হবে, তবে আগে কেনো। একেকটি নির্বাচন আয়োজন করতে হলে অনেক খরচ ব্যয় হয়।
তিনি আরো বলেন, আড়াইশ’ বছর আগে যেমন ইংরেজ বেনিয়ারা আমদের টাকা-ধন সম্পদ শোষন করেছিলো। ঠিক তেমনভাবে এমনিতেই বিগত ১৫ বছর ক্ষমতা আঁকড়ে থেকে সেই দখলদার সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে, ভুয়া নির্বাচনের নামে দেশকে লুন্ঠন করে, দেশের ব্যংকগুলো ফোকলা করে দিয়ে গিয়েছে। নিজের দেশের মানুষ হয়েও যাওয়ার আগে সব টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।
ঐতিহাসিক সিপাহী বিপ্লব প্রসঙ্গে ড. আসাদুজ্জামান রিপন আরো বলেন, ৭ নভেম্বর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আজ থেকে ৫০বছর আগে সিপাহী জনতার বিপ্লব যদি না হতো তাহলে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আর ভারতীয় আধিপত্যবাদের শাসন পর্যায়ক্রমে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বাংলাদেশে চলতেই থাকতো। দেশ ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত হতো। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের কারণে আমাদের দেশ বিদেশীদের করদ রাজ্য হওয়ার থেকে মুক্ত হয়েছে। আমাদের কথা বলার ক্ষমতা, গণতান্ত্রিক চর্চা ও নির্বাচন হয়-সবই ৭ নভেম্বরের কারণে। সেই দিন যদি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যদি মুক্ত না হতেন, তাহলে দেশে জাতীয়তাবাদের রাজনীতির ধারা তৈরি হতো না। বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা দেশে সফল হতো না।
দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে বিএনপি এই নেতা আরো বলেন, ভবিষ্যতে আমি নির্বাচন করতে চাই, তবে তা জনগণের শাসন কায়েম করার জন্য। জনগণের ক্ষমতায়ন কায়েম করার জন্য। এক ব্যক্তির ক্ষমতায়ন নয়।জনগণ যেনো মনে করে আমি তোমকে আমাদের প্রতিনিধি বানিয়েছি, তুমি আমার শাসক নও।
তিনি বলেন, আমি শৃঙ্খলা মনের মানুষ। আল্লাহ সর্বশক্তিমান-আমি এই বিশ্বাষকারী মানুষ। আপনাদের চাওয়ার প্রতিফলন ইনশাআল্লাহ হবে। এখনো দলীয়ভাবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয় নাই, সম্ভাব্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আল্লাহর ওপর ভরসা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ভালো কিছু করবেন। আমি আপনাদের সাথে সবসময় ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।
বিএনপির লৌহজং ও টংগিবাড়ীর সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের আয়োজনে স্থানীয় বিএনপি নেতা জিয়াউল ইসলাম মাসুদের সভাপতিত্বে ও মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আতাউর রহমান খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন নসু, মো: কামাল খান, মুন্সীগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি শেখ সোলায়মান তপু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা মতিউর রহমান মতিসহ দলীয় অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রমুখ।



