চুয়াডাঙ্গায় স্পিরিট পানে আরো ১ জনের মৃত্যু, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭

সিভিল সার্জন বলেন, এখনো যারা গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারা দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যোগাযোগ না করলে ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা ও সহযোগিতা দেবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

হুসাইন মালিক, চুয়াডাঙ্গা

Location :

Chuadanga

চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত পানীয় স্পিরিট পানে অসুস্থ হয়ে হায়েস আলী (৪০) নামের আরো একজন দিনমজুরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল সাতজনে। এছাড়া আরো চারজন দিনমজুর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে হায়েস আলীর লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

হায়েস আলী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের কাথুলী গ্রামের গোলাম রসুলের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সন্দেহজনকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি এই বিষাক্ত স্পিরিট পানে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছে, তিনি নেশায় আশক্ত ছিলেন।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন মিলে স্পিরিট পান করেন। এরপর একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন সবাই। শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রথমে দুইজন এবং পরদিন রোববার আরো চারজন মারা যান। এদের মধ্যে চারজনের লাশ গোপনে দাফনও সম্পন্ন করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজেলার নফরকান্তি গ্রামের খেদের আলী (৪০), খেজুরা গ্রামের সেলিম (৪০), পিরোজখালি গ্রামের লালটু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ গ্রামের সামির (৫৫) ও সরদার লালটু (৫২)।

এদিকে, এ ঘটনায় সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল। এর নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আওলিয়ার রহমান। এ সময় একজনকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা: হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন ও সচেতন করেছেন। আমরা একজনকে অসুস্থ অবস্থায় খুঁজে পেয়েছি। তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি রেখেছি।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের টক্সিকোলজি বিভাগে কথা বলেছি। তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অসুস্থদের বিনা খরচে চিকিৎসা দেয়া হবে। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়াও পরিশোধ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।

সিভিল সার্জন বলেন, এখনো যারা গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারা দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যোগাযোগ না করলে ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা ও সহযোগিতা দেবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

অপর দিকে, এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে অবৈধভাবে স্পিরিট, মদ বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বছরের পর বছর মদ বিক্রি হচ্ছে কেউ কিছু বলে না। এখন ছয়জনের প্রাণ গেল, তবু কি প্রশাসন নড়বে?

পুলিশ জানিয়েছে, লাশগুলো উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মৃত্যুর কারণ ও অ্যালকোহলের উৎস অনুসন্ধানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।