স্কুল থেকে বাসায় ফিরে নিরব দেখতে পেল মায়ের নিথর দেহ

দুপুর দেড়টার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দরজা খুলেই দেখতে পায় বিছানায় পড়ে আছে তার মায়ের নিথর দেহ।

মো: বোরহান উদ্দিন রব্বানী, শরীয়তপুর

Location :

Shariatpur
প্রতীকী ছবি

সকালেই মায়ের কাছে বায়না ধরেছিল স্কুলে যাবে না নিরব। আজ তার মায়ের কাছেই থাকতে চেয়েছিল ছেলেটি। মা তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে স্কুলে যেতে সম্মত করে একমাত্র ছেলেকে। অভিমান ভরা চোখে ছেলেটি স্কুল ব্যাগ হাতে নিয়ে চলে যায় তার বিদ্যাপিঠ পালং তুলাসার গুরুদাস উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিরব কি জানতো এটাই হবে মায়ের সাথে তার শেষ কথা!

দুপুর দেড়টার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দরজা খুলেই দেখতে পায় বিছানায় পড়ে আছে তার মায়ের নিথর দেহ।

কান্নাজড়ানো কণ্ঠে কথাগুলো জানাচ্ছিল সারা জীবনের জন্য মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হওয়া ছেলেটি।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র রূপনগরের একটি তিনতলা বাড়ির দোতলার একটি কক্ষে। পুলিশ ও স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন ওই নারীকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। দিন-দুপুরে এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পালং মডেল থানা ও নিহতের ভাই আসলাম কাজি জানান, জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের কাজি কান্দি গ্রামের মৃত সেকেন্দার কাজির স্বামীপরিত্যক্তা মেয়ে নাজমা বেগম (৪২) প্রায় দুই বছর আগে একমাত্র ছেলে নিরবকে নিয়ে শরীয়তপুর জেলা শহরের রূপনগর এলাকার মালেক মাদবরের বাড়ির দোতলায় একটি ফ্লাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়ে বাসাতেই অবস্থান করছিলেন তিনি। দুপুর দেড়টার দিকে ছেলে নিরব বাসায় ফিরে দরজা খোলা দেখে রুমে প্রবেশ করে তার মাকে ডাক দেয়। তার মা ডাকের সাড়া না দেয়ায় ছেলেটি বাড়িওয়ালা ও পাশের ফ্লাটের লোকজনদের ডেকে আনে। তারা গিয়ে দেখতে পায় খাটের উপর নাজমা গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরিদপুর সিআইডির ফরেনসিক টিমকে খবর দেয়।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি শ্বাসরোধ করে নাজমা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে। ফরিদপুর থেকে সিআইডির ফরেনসিক টিম আসার পর নমুনা সংগ্রহ করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এব্যাপারে জোর তদন্ত চলছে।’