ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে সরকার কাজ করছে : রিজওয়ানা

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা একটি স্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ শুরু করছে। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় চলতি মৌসুমে ১৭ হেক্টর জমিতে...

মফিজুর রহমান, অভয়নগর (যশোর)

Location :

Jashore
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা একটি স্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ শুরু করছে। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় চলতি মৌসুমে ১৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। আমডাঙ্গা খালের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে যশোরের অভয়নগরে ভবদহ স্লুইসগেট পরিদর্শন শেষে ভবদহ কলেজ মাঠে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘জনগণ, সরকার ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ভবদহ অঞ্চলে কাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধ ২০ হেক্টর জমির ভেতর ১৭ হেক্টর জমির পানি নিষ্কাশন করা হয়েছে। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের কাজ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে বর্তমান সরকার আন্তরিক। যে কারণে আমডাঙ্গা খাল খননের মধ্যদিয়ে জলাবদ্ধ এলাকার পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘অতীতে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের সদিচ্ছার ঘাটতি ছিল। সমস্যার সমাধান না করে জটিলতা সৃষ্টি করেছেন তারা। তবে বর্তমান সরকার আমডাঙ্গা খাল, টেকা, হরিভদ্রা ও আপার ভদ্রা নদী খননের কাজ দ্রুত শুরু করবে। আর এই খননের কাজ করবে সেনাবাহিনী। ভবদহের বিষয়ে আমরা সবাই সজাগ আছি, যাতে মানুষের দুর্ভোগ কমে। এ অঞ্চলের কৃষকের বাণিজ্যিকহারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে। এছাড়া ক্ষুদ্র ঋণ আদায় বন্ধ করা হয়েছে।’

কয়েকটি নদীর পাশে ইটভাটা গড়ে উঠার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইটভাটাতো আর সরকার করেনি। এগুলো মানবসৃষ্ট সমস্যা। এসব সমস্যার সমাধান এলাকাবাসীরই করতে হবে। ভবদহ অঞ্চলের আগের সকল বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি কমিটি তদন্ত শুরু করেছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডর (জিওসি) মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো: আজাহারুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার রওনক জাহান, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে বিজিবি’র হেলিকপ্টারে তিন উপদেষ্টা অভয়নগরের নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। পরে ওই মহাবিদ্যালয়ের সভাকক্ষে তালিকাভুক্ত কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন তারা। বেলা ১১টার দিকে মহাবিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বিলে গিয়ে কৃষকের ধান কাটা পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত কৃষকদের সাথে কথা বলে তাদের খোঁজখবরও নেন তিন উপদেষ্টা। এর পর ভবদহ এলাকা পরিদর্শনে যান তারা।