উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়কে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলনকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এনজিওর অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা প্রকল্প থেকে চাকরি হারানো স্থানীয় শিক্ষকরা আজ সকালে মহাসড়কে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং এক শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। আন্দোলনকারীরা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে তারা মহাসড়কে অবস্থান নিলেও পুলিশ অকারণে বলপ্রয়োগ করেছে। অপরদিকে পুলিশ বলছে, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তারা বাধ্য হয়েই ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী শিক্ষিকা আঞ্চলিক ভাষায় চিৎকার করে বলছেন, ‘এই মরি গিওই, মরি গিওই।’ ভিডিওটি প্রকাশের পর জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ধারণা করতে থাকেন, পুলিশের লাঠিচার্জে কেউ গুরুতর আহত কিংবা নিহত হয়েছেন। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত নয়, তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে আহত হোস্ট শিক্ষিকাকে উখিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
চাকরিচ্যুত এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, আমরা তিন মাস ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। বারবার আলোচনার নামে শুধু আশ্বাস দেয়া হয়েছে। সমাধান না হওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।
স্থানীয়রা জানান, সকালে সড়কে অবস্থান নেয়ায় উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। বিশেষ করে কক্সবাজারগামী যাত্রীবাহী বাস ও অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ে।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউনিসেফের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা প্রকল্পে কয়েক শ’ স্থানীয় শিক্ষক কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি ওই প্রকল্পের একাংশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষক চাকরিচ্যুত হন। এরপর থেকে তারা পুনর্বহালের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
সর্বশেষ আজকের ঘটনায় শিক্ষকদের সাথে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান সৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন ঘিরে প্রশাসনের কোনো লিখিত বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না।