দিনাজপুরের পার্বতীপুরে রেলওয়ের লিজ নেয়া জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কৃষক মাহফিজুল হত্যার ঘটনায় মামলা না নেয়ার প্রতিবাদে এবং থানার ওসির অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার সকালে রংপুর-ফুলবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা বাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। পরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। শত শত নারী-পুরুষ এতে অংশ নেয়। এরপর মিঠাপুকুর-ফুলবাড়ী এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। এতে ঘণ্টখানেক ওই সড়কে যাতায়াত বন্ধ ছিলো। এসময় বক্তব্য রাখেন নিহতের স্ত্রী সঞ্জুয়ারা বেহম, মাহাবুল ইসলাম, রুবেল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কৃষক মাহফিজুল ইসলাম রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের পাশে ৩ একর পরিত্যক্ত জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। গত ১ সেপ্টেম্বর কীটনাকশক দিয়ে জমির ধান পুড়িয়ে দিতে গেলে হাতে নাতে এলাকাবাসীর হাতে আটক হন একই এলাকার মাফু ও আব্দুল কাদের। তাদেরকে মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে দেয়া হলে উভয় পক্ষের মধ্যে ইউএনওর মধ্যস্ততায় সমঝোতা হয়। ইউএনও দুই পক্ষকে জমিতে না যাওয়ার নির্দেশনা দেন। ৩ সেপ্টেম্বর মাহফিজুল জমির কাছে গেলে প্রতিপক্ষ তাকে পিটিয়ে আহত করে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত কৃষকের ছেলে সজিব পার্বতীপুর থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামুন মিয়া মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। মামলা না নেয়ায় উল্টো হত্যাকারীদের হুমকি-ধমকিতে নিহতের পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা ওসির অপসারণ চান।
বিষয়টি জানিয়ে এলাকাবাসী দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই উজ্জল জানান, ৩ সেপ্টেম্বর হামলার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি কৃষক মাহফিজুলকে বেদম মারধর করা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। ঘটনাস্থল থেকে আসামিদের গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করেছি। থানা কেন মামলা নিচ্ছে না. সেটা আমি জানি না।
নিহতের ছেলে সজিব ইসলাম বলেন, ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর আমি থানায় নিজে মামলার এজাহার নিয়ে যাই। তখন উল্টো ওসি আমাকে বলেন, আপনি তো এই হত্যাকাণ্ডের আসামি, আপনি বাদি কীভাবে? এরপর থানা থেকে চলে আসি। পরে আবারো যোগাযোগ করি। তখন ওসি প্রধান আসামিদের বাদ দিয়ে এজাহার দায়ের করতে বলেন। আমি চাই যারা আমার বাবাকে হত্যা করলো, তাদের নামে মামলা হোক।
পার্বতীপুর থানার ওসি মামুন দাবি করেন, আমার কাছে এ বিষয়ে কেউ মামলা দিতে আসেনি। তবে ওই ঘটনায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে যাদের আটক করে থানায় দিয়েছিল তাদের ৫৪ ধারায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।