বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিএনপি যুবকদের পাশে থাকবে এবং উদ্যোক্তাদের পণ্য বিদেশে রফতানী করা হবে। ফলে দেশের চাহিদা যেমন মিটবে তেমনি আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করবে।’
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি আয়োজিত নীলফামারী, রংপুর ও সৈয়দপুর জেলায় রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেবে বিএনপি। এছাড়া কৃষিকে আধুনিকায়ন ও কৃষকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,‘আমাদের সফলতা অর্জন করতে হলে এখনো অনেক পরিশ্রম করতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রতিটি ঘরে পৌঁছাতে হবে। এ দায়িত্ব নিতে হবে জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবো। কেননা আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের সাথে কমিটমেন্ট করেছি। দেশের মানুষের কাছে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে ৩১ দফার কর্মশালার আলোচনা পৌছে দিবেন।’
‘১/১১ সময়ের পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা জুলুম হয়েছে’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা জুলুম করবোনা, প্রতিশোধ নেবো না। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আমরা দেশের জনগণের কাছে রাষ্ট্রের আগামী কাঠামো তুলে ধরবো। জনগণ যাতে আগামী দিনে বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে পারে। তাই জনগণের আস্থা ধরে রাখতে প্রতিটি বিএনপি নেতাকর্মীকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।’
এক পর্যায়ে তিনি তার এ কথার সাথে একমত কিনা তা জানতে নেতাকর্মীদের হাত তুলতে বলেন। সকলে তারেক রহমানকে সমর্থন করলে তিনি সবাইকে শপথ নিতে বলেন- যে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে এক কাতারে কাজ করবো। জনগণ আমাদের নির্বাচিত করলে আমরা জনগণের উন্নয়নে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সফলতা অর্জন করতে হলে এখনো অনেক পরিশ্রম করতে হবে। আপনাদের অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা জনসমর্থনবিরোধী কাজ করবেন তাদের সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আমাদের অর্জন বৃথা হয়ে যাবে।’
এর আগে তিনি ভার্চুয়ালি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেয়া নেতাকর্মী প্রশ্ন ও প্রস্তাবনা শুনে উত্তর দেন। এসময় তারেক রহমান কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নের পরিকল্পনা গুলো তুলে ধরেন।
তারেক রহমান বলেন,‘বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি লোক বেকার। তাই কারিগরি থেকে উদ্যোগতা এবং বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে প্রাধান্য দেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন- ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা দেয়া হবে।’
এ দিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নীলফামারী শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ওই কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘৩১ দফা বিএনপির একার দফা না। বিএনপি কি করবে ক্ষমতায় গেলে?, সে প্রসঙ্গগুলো ৩১ দফায় বিস্তারিত আছে। সংস্কারের প্রশ্নে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ৩১ দফার বিকল্প নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুর্নীতি এখনো থামেনি। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে বিএনপি কাজ করে যাচ্ছে।’
এ সময় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জবি উল্লাহ, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার ও সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম।
কর্মশালায় অংশ নেন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের প্রায় ৬ শ’র বেশি নেতা। কর্মশালায় রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের বিএনপি’র ৩১ দফা কর্মসূচি তুলে ধরা হয়।