আমার প্রশ্ন, কেন প্রায় ১৩ মাস পর এমন পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ? আমি কি গত কয়েক মাসে আওয়ামী লীগ হয়েছি, নাকি অন্য কিছু? আমি বিচার চাই না, কারণ আগে ৩২ ভাঙার বিচার, তারপর বাংলার আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনার।
ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের বাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আগুনের প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে ঘটনাটি ঘিরে উপজেলায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্যের পাশাপাশি জনমনে তৈরি হয়েছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া।
আওয়ামী লীগ নেতা লিপটন দাবি করেছেন, ‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছেন তিনি। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, প্রিয় ফেনী, সোনাগাজী ও নবাবপুরবাসী, আমার বাড়িতে সন্ত্রাসী বন্ধুদের অগ্নিসংযোগে আমি মোটেও বিচলিত নই। যেখানে বাংলা ও বাঙালির তীর্থস্থান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আগুন জ্বালিয়ে ভুলডোজার দিয়ে ঘুটিয়ে পুরো বাংলাদেশকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে, সেখানে আমার মতো নগণ্য একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা খুবই স্বাভাবিক। আমার প্রশ্ন, কেন প্রায় ১৩ মাস পর এমন পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ? আমি কি গত কয়েক মাসে আওয়ামী লীগ হয়েছি, নাকি অন্য কিছু? আমি বিচার চাই না, কারণ আগে ৩২ ভাঙার বিচার, তারপর বাংলার আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনার।’
জানা গেছে, ঘটনার সময় বাড়ির কেয়ারটেকার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনতলা ভবনের নিচতলায় নিরাপত্তা প্রহরীর থাকার কক্ষে আগুন দেখতে পান স্থানীয়রা। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে কেয়ারটেকারের থাকার একটি খাটসহ কিছু আসবাবপত্র পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আগুনের ঘটনা নিয়ে আমরা চিন্তিত। ৫ আগস্টের পর আমার ইউনিয়নে কোনো নাশকতা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটেনি। এক বছর পর হঠাৎ এমন ঘটনা জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’ তিনি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবি জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বায়োজিদ আকন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, ‘ভবনের নিচতলার কেয়ারটেকার থাকার কক্ষে আগুন লেগেছিল। একটি খাটসহ কিছু আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হতে পারে। তবে আগুন লাগার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি।’
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন নবাবপুর ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আহাম্মদের সন্তান। তার বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা।