নির্বাচন সামনে রেখে দখলের পাঁয়তারা

বগুড়া ‘চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রধান ফটকে ১০ দিন ধরে তালা

‘আমরা চাইছিলাম একটি নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব নির্বাচিতদের হাতে দায়িত্ব দিতে। কিন্তু তাতে বাধা দেয়া হচ্ছে।’

আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া অফিস

Location :

Bogra Sadar
বগুড়া  ‘চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রধান ফটকে ১০ দিন ধরে তালা
বগুড়া ‘চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রধান ফটকে ১০ দিন ধরে তালা |নয়া দিগন্ত

বগুড়ার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ‘চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রধান ফটকে ১০দিন ধরে তালা ঝুলছে। এতে পণ্য রফতানি, সদস্য নবায়নসহ নানা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। চেম্বারের নির্বাচন সামনে রেখে এখানে প্রভাবশালী মহল রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে একটি বড় রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা এখানকার চেয়ার দখলের পায়তারা করছেন বলে ব্যবসায়ীরা আশংকা করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আওয়ামী ব্যবসায়ী গ্রুপ চেম্বারের নিয়ন্ত্রণে রেখে ছিল। চেম্বার অব কমার্স ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ছেলে মাসুদার রহমান মিলন বিনা ভোটে সভাপতির চেয়ার দখল করেন। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর মিলনও আত্মগোপন করলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও সাবেক বিএনপি নেতা সাইরুল ইসলাম। তিনি এখন বিএনপি দাবিদার হলেও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মিলনের সাথে মিলে মিশে চেম্বারে রাজত্ব করেছেন। হাসিনার পতনের পর দীর্ঘ দিন নির্বাচন বিহীন চেম্বারে ভোটের দাবিতে ব্যবসায়ীরার রাস্তায় নামলে গত ২১ জুন গঠিত হয় তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এর পরদিন গত ২২ জুন হঠাৎ করেই কিছু লোক গিয়ে চেম্বার ভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

অভিযোগ উঠেছে, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি খায়রুল বাসারের ভাগ্নে আকবরিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান, চেম্বারের সাবেক পরিচালক ও ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে পরিচিত হাসান আলী আলালের একদল অনুসারী এই তালা লাগানোর সাথে জড়িত।

চেম্বারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানিয়েছেন, পণ্য রফতানিতে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। গত ২৮ জুন তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দিয়ে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান হাসান জুট মিলের ব্যবস্থাপক সানাউল হক বলেন, ‘চেম্বার বন্ধ থাকায় এখন আমাদের প্রতিটি অরিজিন সার্টিফিকেট ঢাকায় গিয়ে সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে করে প্রতি সার্টিফিকেটে সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে, যেখানে বগুড়া চেম্বারে লাগত মাত্র ৫০০ টাকা।

চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইরুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা চাইছিলাম একটি নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব নির্বাচিতদের হাতে দায়িত্ব দিতে। কিন্তু তাতে বাধা দেয়া হচ্ছে।’

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান রেজাউল হাসান রানু বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই চেম্বারে তালা দেয়া হয়েছে। এখনও কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি।’

এদিকে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী হাসান আলী আলাল দাবি করেছেন, আমার লোকেরা চেম্বারে তালা লাগায়নি।